রবিবার , ৪ আগস্ট ২০২৪ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

মাদকে সয়লাব ঈশ্বরদী পৌরশহর

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
আগস্ট ৪, ২০২৪ ১২:৩৮ পূর্বাহ্ণ

ভারতের সীমান্তবর্তী নাটোরের লালপুর এবং রাজশাহীর বাঘা ও চারঘাট উপজেলার সঙ্গে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সড়ক ও নদীপথে যোগাযোগ রয়েছে। পদ্মানদীর তীরবর্তী হওয়ায় ভারত থেকে নদী পথে লালপুর, বাঘা ও চারঘাট হয়ে ফেন্সিডিল, গাঁজা, হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদক আসছে ঈশ্বরদীতে।

এছাড়াও ঈশ্বরদীর সঙ্গে দেশের বিভিন্ন এলাকার রেলপথ সংযোগ রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্পট থেকে ইয়াবা, হেরোইন, কোকেন আসছে ঈশ্বরদীতে। আর এই মাদকের ব্যবসা করে ঈশ্বরদী পৌরসভার পিয়ারাখালি, কাচারিপাড়া (ব্লাকপাড়া), ফতেমোম্মাদপুর লোকোসেট, এমএস কলোনির তিন তলা মোড়, সরকারি কলেজপাড়া, শেরশাহ রোড ও আলহাজ্ব রিফুজি ক্যাম্পের বেশ কিছু মাদক কারবারি হয়েছেন কোটিপতি। বাস করেন বিলাস বহুল বাড়িতে। চড়েন দামি গাড়িতে।

তাদের কয়েকজন আবার মাদক কারবারের পাশাপাশি অন্য ব্যবসাও খুলেছেন। দুই একজন নির্বাচিত হয়েছেন জনপ্রতিনিধিও। এসব মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ৭-৮টি করে মাদক মামলাও রয়েছে। জেল হাজতেও গেছেন কেউ কেউ। তারপরও থেমে নেই তাদের মাদক কারবার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈশ্বরদী শহরেই তালিকাভুক্ত মাদক কারবারিদের সংখ্যা ৩৪ জন। তাদের নিয়ন্ত্রণে শহরেই দেড় শতাধিক মাদকস্পট রয়েছে। এর মধ্যে অরণকোলা গরুহাট পাড়া, ভাঁটাপাড়া, মোকারামপুর, ফতেমোহম্মাদপুর, তিন তলা মোড়ে, বাইপাস ডবল রেল লাইন মোড়, আমবাগান, শেরশাহ রোড বেলতলা, বকুলের মোড়, কলেজ মোড়, সদর হাসপাতালের পেছন, কদম তলা মোড়, আলহাজ্ব ক্যাম্প পাড়া, খায়রুজ্জামান বাস টার্মিনাল, ব্লাক পাড়া, কাচারিপাড়া (হেরোইনপট্টি), রহিমপুর শৈলপাড়া,পিয়ারপুর, পিয়ারপুর, সাঁড়া গোপালপুর তালতলামোড়, তিন কোনা পুকুরপাড় উল্লেখযোগ্য।

জানা গেছে, আর মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন দলীয় প্রভাবশালী কোনো কোনো নেতা, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক পরিবার, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকরাও। ইতিপূর্বে ঈশ্বরদীর এক প্রভাবশালী মাদক কারবারি আলিয়া ভুলুকে ক্রস ফায়ারে হত্যা করা হয়। ঈশ্বরদীর কয়েকটি প্রভাশালী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান মাদকাসক্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করার ঘটনাও রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব মাদক কারবারির সঙ্গে মাসোয়ারা চুক্তি রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের কতিপয় কর্তাব্যক্তির, এমনকি জনপ্রতিনিধিদের মধ্যেও কেউ কেউ এদের সঙ্গে জড়িত বলে জানা যায়।

স্থানীয়, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ঈশ্বরদী থানা সূত্র মতে, শহরের পিয়ারাখালি কাচারিপাড়ার (ব্লাকপাড়া) আলোচিত মাদক কারবারি মোহাম্মাদ আলী বাবু ওরফে বরকি বাবু। তার নামে ২০১১ সাল থেকে এই পর্যন্ত মাদক মামলা হয়েছে ৯টি। তার ছেলে মো. সুমন শেখের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় ৪টি ও পাবনা সদর থানা মিলে ৫টি মামলা রয়েছে। বরকি বাবুর স্ত্রী স্বরবানী ওরফে বাচার নামে একটি মাদক মামলা রয়েছে। বরকি বাবুর মেয়ের নামেও মামলা রয়েছে। এই পরিবারটি হেরোইন কারবারে ঈশ্বরদীসহ আশেপাশের এলাকার মধ্যে সেরা। তার বাড়ি থেকে কোটি টাকার হেরোইন ও সোনা চোরাচালানকারী সদস্যদেরও আটক করা হয়েছিল।

সূত্রগুলোর মতে, শহরের ফতেমোহাম্মাদপুর লোকোসেড এলাকার মৃত পিয়ারুর ছেলে নাদিম ও বেদিন সোহেল, নুরুর ছেলে উজ্জ্বল ওরফে ইনটেক উজ্জ্বল, আব্দুল করিমের ছেলে আরিফ, আসলাম খাঁর ছেলে একরাম খাঁ, তিন তলা এলাকার আসাদুলের ছেলে পিন্টু, শেরশাহ রোডের কামরুদ্দিনের ছেলে আফতাব আলীসহ বেশ কিছু মাদক কারবারি রয়েছে। তাদের প্রত্যেকেই একাধিক মাদক মামলার আসামি।

শহরের পিয়ারাখালি কাচারিপাড়ার (ব্লাকপাড়া) আলোচিত মাদক কারবারি মোহাম্মাদ আলী বাবু ওরফে বরকি বাবুর ছেলে মো. সুমন শেখ বলেন, ‘আমরা কেউ মাদকের কারবার করি না।‘ তবে তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা এতগুলো মাদক মামলার আসামি কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি সুমন শেখ।

ঈশ্বরদী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঈশ্বরদীর অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা সব সময় মাদক দ্রব্যের বিষয়ে কঠোর। প্রতিদিনই অভিযান চালিয়ে মাদক কারবারিদের আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হচ্ছে। আমাদের দুই একজন কর্মকর্তাদের মাদক কারবারিদের সঙ্গে লেনদেন থাকতে পারে। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় ঈশ্বরদীকে সম্মেলিতভাবে মাদক মুক্ত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন এমপি মহাদয়। আমরা এখন তাঁর নির্দেশনা মতে কাজ শুরু করেছি।

ঈশ্বরদী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মাদকের বিষয়ে আমরা সব সময় জিরো টলারেন্সে আছি। থানার কোনো কর্মকর্তার মাদক কারবারির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। এটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এমপি মহাদয়ের নির্দেশনার পর মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানের গতি আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের সংসদ সদস্য গালিবুর রহমান শরীফ বলেন, ‘সম্মিলিতভাবে যেকোন মূল্যে ঈশ্বরদীকে মাদক মুক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা সভায় স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারী কে কোন দলের এবং কোন পরিবারের তা না দেখে ও দলীয় কোনো নেতা বা জনপ্রতিনিধির সুপারিশ না শুনতেও স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই মাদক মুক্ত ঈশ্বরদী।’

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

আপনার জন্য নির্বাচিত

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ