বৃহস্পতিবার , ৫ অক্টোবর ২০২৩ | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউরেনিয়াম হস্তান্তর

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
অক্টোবর ৫, ২০২৩ ৫:৩১ অপরাহ্ণ

ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যোগ দেন দুই নেতা। এর আগে প্রকল্পের পরিচিতি তুলে ধরেন পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর। অনুষ্ঠানে পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদন ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রথম ব্যাচের ইউরেনিয়াম হস্তান্তর সম্পর্কিত ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ডিজি রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সিই লিখাচেভ।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার বক্তব্যে বলেন, রাশিয়ার পরীক্ষিত বন্ধু বাংলাদেশ। সমতা ও সম্মান এই সম্পর্কের ভিত্তি। শিডিউল অনুযায়ীই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ চলছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৬ সালে উৎপাদনে আসবে। কেবল নির্মাণ নয়, রূপপুর প্রকল্পের পুরো লাইফটাইমে কারিগরি ও প্রযুক্তি সহায়তায় পাশে থাকবে রাশিয়া। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করছেন বলেও এ সময় বক্তব্যে উল্লেখ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ পদক্ষেপ বাস্তবায়নের প্রতি অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, পারমাণবিক শক্তি আমরা শান্তিরক্ষায় ব্যবহার করব। বাংলাদেশে আমরা পরমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করেছি। একটি স্বাধীন পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষও প্রতিষ্ঠা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছি। এখন পর্যন্ত আপনার (পুতিন) সহযোগিতায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত হয়েছেন তাদেরকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আজ বাংলাদেশের জনগণের জন্য অত্যন্ত গর্বের দিন। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রচেষ্টায় রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সফলতার মুখ দেখছে। আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ রাশিয়ার সহযোগিতায় আমরা সেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি তখন সবার জন্য বিদ্যুৎ দেব— এ প্রতিশ্রুতি নিয়ে আমি কাজ শুরু করি। জ্বালানিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করি। যদিও সে সময় কাজগুলো শেষ করতে পারিনি। ২০০৮ সালে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করেই এই প্রকল্পটা আমরা হাতে নিই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ পদক্ষেপ বাস্তবায়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি।আইএইএ এর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের সদস্য ড. রুহুল কুদ্দুস, পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত, ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নায়েব আলী বিশ্বাস ও পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলি মালিথাসহ সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন স্তরের মানুষ।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে পারমাণবিক মর্যাদার শুরুটা ১৯৬১ সালে। সেসময় পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে পদ্মা নদী তীরবর্তী পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। পরে নানা সীমাবদ্ধতায় সেটি বন্ধ হয়ে যায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বর্তমান সরকারের টানা তিন মেয়াদে প্রায় ১৫ বছরে প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারী দেশের তালিকায় ৩৩তম সদস্য হচ্ছে বাংলাদেশ।

রাশিয়ার সহযোগিতায় নির্মাণ হওয়া দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। প্রকল্পটির ৯০ ভাগ অর্থায়ন হচ্ছে রাশিয়ার ঋণে। ১০ ভাগের জোগান দিচ্ছে সরকার। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হলে এর দুইটি ইউনিট থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

এদিকে গত ২৮ সেপ্টেম্বর আকাশপথে রাশিয়া থেকে ঢাকায় পৌঁছায় পারমাণবিক জ্বালানি। পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সড়কপথে এটি রূপপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর আজ সকালে পারমাণবিক জ্বালানির দ্বিতীয় চালান রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। আগামীকাল শুক্রবার যেটি রুপপুরে এসে পৌঁছাবে।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ