বুধবার , ৪ অক্টোবর ২০২৩ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

রূপপুর প্রকল্প
বৃহস্পতিবার ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
অক্টোবর ৪, ২০২৩ ১১:৩৬ অপরাহ্ণ

‘সাবাস, বাংলাদেশ, এ পৃথিবী/অবাক তাকিয়ে রয়/জ্বলে-পুড়ে-মরে ছারখার/ তবু মাথা নোয়াবার নয়..’ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কবিতার মতো নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ একেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। সর্বশেষ এই তালিকায় যুক্ত হলো রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এরই মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের জন্য রাশিয়া থেকে এসেছে ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) তা আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ঐতিহাসিক এই কমিশনিংয়ের মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। ২০২৫ সালের শুরুতে উৎপাদন পুরোপুরি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

আজ বুধবার রূপপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ১০ থেকে ১৫ বছর সময় লেগেছে। আমরা ৭ বছরে করতে পেরেছি। আগামী দেড় বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০২৫ সালের শুরুতে পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে পারব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের এই অর্জনে বিশ্বের অনেক দেশ হতবাক। কোনো সাড়াশব্দ ছাড়াই আমরা এই পর্যায়ে উঠে এসেছি। এই অর্জনকে বঙ্গবন্ধুর প্রতি উৎসর্গ করতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর দেশের প্রতি কমিটমেন্ট না থাকলে এই অর্জন সম্ভব হতো না।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে রূপপুরে এসেছে উচ্চপর্যায়ের রুশ প্রতিনিধি দল। প্রকল্প এলাকায় অবস্থান করছেন মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানসহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। ফলে পুরো প্রকল্প ও গ্রিন সিটি আবাসিক এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানকে ঘিরে উৎসবের সাজে সেজেছে ঈশ্বরদীর রূপপুর এলাকা। পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিভিন্ন রঙের পতাকা শোভা পাচ্ছে। গ্রিনসিটি আবাসিকের সামনের প্রাচীরে রঙিন চিত্রকর্ম নজর কাড়ছে সবার। একদিকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অন্যদিকে সাজসাজ রব। সব মিলিয়ে রূপপুর যেন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ভিন্ন এক জায়গা। তবে ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে এখানকার মানুষ উন্মুখ হয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রকল্প পরিচালক ড. সৌকত আকবর জানান, প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ানসহ বিদেশি নাগরিকরা গ্রিনসিটি আবাসনে থাকেন। গ্রিনসিটির ভেতরে তাদের জন্য নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই আয়োজন চলবে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত।

এর আগে রাশিয়া থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান রূপপুর পৌঁছে। আগামীকাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের কাছে এই ইউরেনিয়াম আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক আলেস্কি লিখাচেভ। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি। হস্তান্তর প্রক্রিয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। রোসাটমের জ্বালানি প্রস্তুতকারী কোম্পানি টেভেলের একটি প্রতিষ্ঠান নভোসিবিরস্ক কেমিক্যাল কনসেনট্রেটস প্ল্যান্ট (এনসিসিপি) রূপপুরের এই জ্বালানি উৎপাদন করছে।

১৯৬১ সালে রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও গতি পায় ২০০৮ সালের পরে। তখন নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে আওয়ামী লীগ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করে। ২০০৯ সালে দলটি ক্ষমতায় আসলে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। তিনি প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করেন।

২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে প্রকল্পটির নির্মাণকাজ এগিয়ে নেয়। ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর ১ হাজার ৬২ একর জমির ওপর প্রকল্পের পূর্ণোদ্দমে কাজ শুরু হয়। ২,৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে দুটি ইউনিট রয়েছে। প্রকল্পের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা করছে রাশিয়া।

প্রকল্পটির নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, নির্ধারিত সময়ে চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। আর দ্বিতীয় ইউনিটেও ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সমপরিমাণ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু আশা করা হচ্ছে। প্রকল্পটির উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে। এর ফলে দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে উল্লেখযোগ্য রাখবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ