► মৎস্য বীজ উৎপাদনকারী খামারের অফিস সহায়ক বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ► নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে ঠিকানা পরিবর্তন
পাবনার ঈশ্বরদী মৎস্য বীজ উৎপাদনকারী খামারের অফিস সহায়ক বেল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে জেলা কোটায় চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কর্মস্থলেও অনিয়মিত তিনি। এ কারণে অফিসের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কিছুই করার নেই বলে দাবি করেছেন উপজেলা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের ব্যবস্থাপক রেজাউল ইসলাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে ঈশ্বরদী উপজেলা মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের অফিস সহায়ক পদে বদলি হয়ে আসা বেল্লাল হোসেনের বাড়ির সঠিক ঠিকানা সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার কলাগাছি গ্রামে। তাঁর বাবার নাম রমজান আলী। কিন্তু জেলার তৎকালীন এক নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশে সিরাজগঞ্জের ঠিকানা অনলাইন থেকে মুছে ফেলা হয়। এরপর লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উলফাতনগরের ঠিকানায় জন্ম নিবন্ধন করে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কক্সবাজারের মহিষখালী মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারে অস্থায়ী ভিত্তিতে যোগদান করেন তিনি।
চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য সরকারি সংস্থার তদন্তে ভুয়া ঠিকানা বের হয়ে আসবে বুঝতে পেরে বেল্লাল হোসেন সেখান থেকে বদলি হয়ে ২০২২ সালের ৪ জুলাই পাবনার ঈশ্বরদী মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারে যোগদান করেন।
সূত্র মতে, যোগদানের পর থেকেই সরকারি চাকরির আচরণবিধি লঙ্ঘন করে অফিস সহায়ক বেল্লাল হোসেন কর্মস্থল ঈশ্বরদী মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারে প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন। এতে কর্মস্থলের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু জেলা মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে অফিশিয়ালভাবে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না ঈশ্বরদী মৎস্য বীজ উৎপাদনকারী খামারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
ঈশ্বরদী মৎস্য বীজ উৎপাদনকারী খামারে কর্মরত দৈনিক হাজিরাভিত্তিক শ্রমিক ও অফিস সূত্র জানায়, অফিস সহায়ক বেল্লাল হোসেন বেশির ভাগ সময়ই অনুপস্থিত থাকেন। এতে খামারের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। এই খামারে সরকারিভাবে পদ রয়েছে মাত্র তিনটি। একটি খামার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, একজন অফিস সহায়ক ও একজন পাম্প অপারেটর। ১০ মাস ধরে পাম্প অপারেটর পদটি শূন্য রয়েছে। ফলে অফিসে লোকবল সংকট দেখা দিয়েছে।
ঈশ্বরদী মৎস্য বীজ উৎপাদনকারী খামারের অফিস সহায়ক বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘সিরাজগঞ্জের বেলকুচির কলাগাছি তাঁর স্থায়ী ঠিকানা। আর লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার উলফাতনগরের ঠিকানাটি আমার এক আত্মীয়ের। সেখানে আত্মীয়স্বজনরা থাকেন। এরই মধ্যে আমার চাকরি স্থায়ীকরণ হয়ে গেছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পদোন্নতি পাব।’
ঈশ্বরদী মৎস্য বীজ উৎপাদনকারী খামারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘অফিস সহায়ক কিভাবে চাকরি নিয়েছে—সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে চাকরি নেওয়া হলে স্থায়ীকরণের সময় তদন্তে আসল সত্যটা বের হয়ে আসবে। তবে বেল্লাল হোসেন অনিয়মিত অফিস করেন। তিনি প্রায়ই ছুুটি কাটান। অফিসে অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চেয়ে তাঁকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’