বুধবার , ২ নভেম্বর ২০২২ | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

আমি চেষ্টা করবো এই এলাকার মানুষ কর্মের সন্ধানে যেনো বাইরে না যায়-সুজাউল

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
নভেম্বর ২, ২০২২ ৪:০২ অপরাহ্ণ
আমি চেষ্টা করবো এই এলাকার মানুষ কর্মের সন্ধানে যেনো বাইরে না যায়-সুজাউল

ঈশ্বরদী উপজেলার শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের গ্রাম লক্ষীকুন্ডা। গ্রামটির চারপাশ কৃষি আবাদ।চারিদিকের সবুজ আর পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে প্রমত্ত পদ্মা নদী।গ্রামটির সৌন্দর্য্য মানুষকে আকর্ষিত করে তুলেছে। গ্রামটির উপর দিয়ে রাস্তার পাশ থেকে কিছুটা দূরে প্রমত্ত পদ্মা নদীর একটি শাখা বয়ে চলেছে।

বর্ষায় ভরপুর হয়ে হঠে,যার মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য্য প্রকৃতি প্রেমের মানুষদের নজর কাড়ে।আর এই লক্ষীকুন্ডা গ্রামেই রাস্তার পাশে মেঠোপথ থেকে কিছুটা পথ পাড়ি দিয়ে গড়ে ওঠেছে খুকুমণি এশা কৃষি এগ্রো ফার্ম।ছয় মাস আগে গ্রামটিতে খুকুমণি এশা কৃষি এগ্রোর একটি ফার্ম গড়ে তোলেন উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের লক্ষীকুন্ডা গ্রামের সুজাউল মোল্লা।পরিকল্পিত ভাবে বেশ সুন্দর,সাজানো গোছানো এই ফার্মটি ১০ বিঘার উপরে গড়ে তুলেছেন তিনি ।এখানে পোল্ট্রি মুরগী,দেশি মাছ,ইকুরিয়াম পদ্ধতিতে বিদেশি বিভিন্ন রংয়ের মাছ,দেশি সবজি,দেশি ফল, ভিয়েতনামি টমেটো সহ বেশ কিছু মিশ্রন জাতীয় কৃষি পণ্য আবাদ হচ্ছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,সুন্দর বেষ্টিত মনোমুগ্ধকর পরিবেশবান্ধব একটি কৃষি এগ্রো ফার্ম গড়ে তুলেছেন লক্ষীকুন্ডা গ্রামের আকরাম মোল্লার ছেলে সুজাউল মোল্লা।পিতা আকরাম মোল্লার তিন সন্তানের বড় সুজাউল মোল্লা।ছোট বেলা থেকেই অভাবের সংসার ও পরিবারকে আর্থিক ভাবে গড়ে তোলার জন্য করেছেন কঠোর পরিশ্রম।কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ছোট একটি চাকরি দিয়ে।চাকরি জীবন তার চিন্তা ধারাকে কখনো পরিবর্তন করতে পারেনি।চাকরি জীবনের গোছানো কিছু টাকা ও বাবার থেকে নেয়া অল্প কিছু অর্থ দিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।চাকরি জীবনের সুত্রে নিজের গ্রাম থেকে অধিকাংশ সময় তিনি বাইরে কাটিয়েছেন।চাকরির পরে ব্যবসা জন্য বেশ সময় বাইরে পার করেছেন।

২০২০ সালে করোনার পড় থেকে সারাবিশ্ব সহ দেশে আর্থিক মন্দা সৃষ্টি হয়।সুজাউল বলেন,ব্যবসা সুত্রে অধিকাংশ সময় বাইরে কাটিয়েছি।করোনার মধ্যে দের বছর বাইরে ছিলাম।তার এই চিন্তা ধারা কিভাবে আসলো এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,করোনার মাঝে যখন ব্যবসার অবস্থা ভালো ছিলোনা, তখন আমি ভাবতাম এলাকার মানুষের জন্য কি করতে পারি।অবশর সময়ে আমি ইউটিউব দেখতাম।ইউটিউব থেকে আমার এই চিন্তা ধারা আসে।ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখে আমি উৎসাহিত হয়ে ভাবলাম আমি তো নিজের গ্রামের জন্য কিছু করতে পারি।তাই ভাবলাম গ্রামের জন্য একটি ফার্ম গড়ে তুলবো সেখানে নিজের এলাকার মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবো।

তিনি বলেন,বর্তমানে ১০ বিঘার উপর আমি এই ফার্ম গড়ে তুলেছি।এখানে পোল্ট্রি মুরগির খামার,দেশি মাছ,ইকুরিয়াম পদ্ধতিতে দেশি ও বিদেশি নানা জাতের রং জাতীয় মাছ,দেশি ফল,শাক, সবজী,ভিয়েতনামী টমেটো সহ বিভিন্ন কৃষি জাতীয় পণ্য চাষ করছি।তিনি আর ও বলেন,এই ফার্ম এর পাশে কয়েক বিঘার উপর দেশি ফল ও বিদেশি ফল মাল্টা সহ কয়েক জাতের ফল চাষের জন্য জায়গা নির্বাচন সম্পর্ন করা হয়েছে।খুব শ্রীঘ্রই এই বাগান গড়ে তোলা হবে বলে তিনি জানান।তিনি আর ও বলেন,আমরা প্রান্তিক এলাকার মানুষ।এখানকার বেশিরভাগ মানুষ অসচেতন।আমি যখন এই ফার্মের কাজ শুরু করি তখন অনেকেই আমাকে বোকা বলতো,অনেকেই বলতো কি তৈরী করছে।এই ইউনিয়নে আমি ই প্রথম এই রকম একটি ফার্ম তৈরীর জন্য উদ্যোগ গ্রহন করি।আমার এই ফার্ম টি তে বর্তমানে ১৫ জন মানুষ দেখাশোনা করছে।তিনি বলেন,সফল হতে হলে মানুষকে সঠিক পরিকল্পনা ও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।আমি এই ফার্মটি সুন্দর ভাবে গড়ে তোলে এলাকার মানুষ ও বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই।সকলের দোয়া চেয়ে তিনি সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

ফার্মের কাজে নিয়োজিত সেলিম হোসেন বলেন,আমি খুকুমণি এশা কৃষি এগ্রো ফার্মে চাকরি করি।আমরা গরিব খেটে খাওয়া মানুষ।
আমাদের এখন বাইরে কাজ করতে যেতে হয়না,এলাকাতেই আমাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।আগে কাজের সন্ধানে অনেক দূরে যেতাম।কাজ পাইতাম আবার পাইতাম না।এখন বাইরে যেতে হয়ন। সুজাউল ভাই আমাদের এখানে কাজের সু্যোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন।এই ফার্মে কাজ করতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।

এলাকাবাসী বলেন,সুজাউলের এই ফার্ম আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে।এই রকম একটি উদ্যোগ আমাদের কখনো চিন্তা ভাবনায় আসেনি।এই এলাকার আর্থিক উন্নয়ন সহ শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।এই এলাকার যুবকদের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করবে।

লক্ষীকুন্ডা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ইউনুস বলেন,আমাদের গ্রামবাসী সুজাউলের এই পরিকল্পনা দেখে প্রথমে হতভম্বের মধ্যেই পড়ে গেছিলো,পাগলের মতো কি করছে সে।তিল তিল করে যখন প্রতিষ্ঠান টি গড়ে তুললো এখন অনেকেই তাকে স্বাগত জানাচ্ছে।আমরা আজও পাড়া গায়ে বসবাস করি,এই আজওপাড়া গায়ে এতো সুন্দর একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে এখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে তা এই গ্রামের মানুষ কখনো ভাবতে পারিনি।আমরা সবাই তার সার্বিক সহযোগিতার জন্য যা যা দরকার আমরা সকলে মিলে করবো।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ