রবিবার , ২১ আগস্ট ২০২২ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

থানা হেফাজতে মৃত্যু : মরদেহ নিচ্ছে না পরিবার, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
আগস্ট ২১, ২০২২ ৭:৩৭ অপরাহ্ণ
থানা হেফাজতে মৃত্যু : মরদেহ নিচ্ছে না পরিবার, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ

পরিবারের সদস্যদের না জানিয়ে করা হয়েছে সুরতহাল প্রতিবেদন। তারপর লাশ কোথায় নেওয়া যাবে আর কোথায় নেওয়া যাবে না, সে শর্ত দিয়েছে পুলিশ। এ অভিযোগ জানিয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল থানা হেফাজতে মারা যাওয়া সুমন শেখের মরদেহ নেয়নি পরিবার।

সুমনকে (২৫) থানায় নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছে—অভিযোগ তুলে রোববার রামপুরা এলাকায় বিক্ষোভ হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিচারের দাবি করেছেন তাঁরা।

গত শনিবার দুপুরে থানা–হাজত থেকে সুমনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ বলছে, সুমন আত্মহত্যা করেছেন। রাতেই তাঁর ময়নাতদন্ত শেষ হয়। এরপর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তরের কথা থাকলেও তা হয়নি। লাশ নিতে রোববার সকালে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে গিয়েছিলেন বলে জানান সুমনের স্ত্রী জান্নাত আক্তার। দুপুরে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা লাশ বুঝে পেতে মর্গে গিয়েছিলাম। কিন্তু লাশ আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। হাতিরঝিল থানা-পুলিশের এক এসআই বলেছেন, গ্রামের বাড়ি নবাবগঞ্জে নেওয়া হলে লাশ দেওয়া হবে। আর যদি বর্তমান বসবাসস্থান ঢাকার রামপুরায় নেওয়া হয়, তাহলে লাশ দেওয়া হবে না।’ এরপর সেখান থেকে ফিরে আসেন জান্নাত ও তাঁর স্বজনেরা।

থানা হেফাজতে স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করতে আদালতে গিয়েছিলেন জান্নাত আক্তার। তবে মামলা করতে পারেননি। সুমাইয়া নামে তাঁর এক স্বজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে আইনজীবীর সঙ্গে মামলা নিয়ে কথা হয়েছিল, তিনি আর ফোন ধরেননি। তাই আদালতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে।’

সুমন হত্যার বিচারের দাবি করে রাত আটটার দিকে পশ্চিম রামপুরায় ইউনিলিভারের পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র পিওরইটের বিপণন অফিসের সামনে মানববন্ধন করেন স্থানীয় লোকজন। ঘণ্টাখানেক পরে সেখানে ছাত্রলীগের একদল নেতা–কর্মী হামলা করেন বলে অভিযোগ করেছেন জান্নাতের ভাই মোশারফ সাইফুল। তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছে। বলেছে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে কাউকে রাস্তায় বের হতে দেবে না।’

১৫ আগস্ট পিওরইটের এই অফিস থেকে ৫৩ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় মামলা হয়। ওই মামলায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তারই সূত্র ধরে শুক্রবার সুমনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সুমন ওই অফিসে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেপ্তার তিনজনের দেওয়া তথ্য এবং অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরদিন সকালে থানায় তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশ হয়। তখন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী থানার সামনে এসে বিক্ষোভ করেন।

পুলিশের ভাষ্য 

পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার আজিমুল হক বলেছেন, সুমনের লাশ রামপুরায় নেওয়া যাবে না বলে কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। তিনি রোববার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, একজন অতিরিক্ত উপকমিশনার মরদেহ নিয়ে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের মর্গে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু পরিবারের কেউ আসছেন না।

পরে সন্ধ্যায় তেজগাঁওয়ে নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আজিমুল হক বলেন, সুমনের মরদেহ পরিবারের সদস্যরা না নেওয়ার পেছনে ইন্ধন রয়েছে। পরিবারের কেউ মরদেহ নিতে আসেননি। সুমনের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর মুঠোফোন অন্যরা ধরছেন।

প্রতিবেশীরা যা বললেন

সুমন শেখের পৈতৃক বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জের দাড়িকান্দি। চাকরির সুবাদে পশ্চিম রামপুরার ঝিলকানন এলাকায় একটি টিনশেড বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। রোববার ওই বাসায় গিয়ে কথা হয় সুমনের বাবা পেয়ার আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে সুমনকে পুলিশ ধরে নেওয়ার কথা জানতে পারেন। ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিচার চান তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সুমনের একজন প্রতিবেশী বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর বাসার সামনে থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পুলিশ সদস্যরা সুমনের বাবার কক্ষটি খুলতে বললে সুমন বলেন, তাঁর কাছে চাবি নেই। পরে তাঁরা ওই কক্ষের তালা ভেঙে একটি শপিং ব্যাগ থেকে টাকা উদ্ধারের কথা উপস্থিত লোকজনকে জানান।

দুপুরে রামপুরায় পিওরইটের অফিসে গিয়ে বন্ধ পাওয়া যায়। সেখানকার একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ‘একটা ঝামেলার কারণে আজ কেউ অফিসে আসেননি।’ পরে অফিসের নিচে কথা হয় শাহজালাল সরদার নামে সুমনের এক সহকর্মীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছয় বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করছি। সুমন খুবই শান্ত প্রকৃতির মানুষ ছিল। একটা কুকুর দেখলেও সে ভয় পেত। এমন মানুষ কীভাবে আত্মহত্যা করে!’

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

আপনার জন্য নির্বাচিত
error: Content is protected !!