ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জাকারিয়া পিন্টু কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। রবিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে বিকেলে ঈশ্বরদী শহরের টেম্পুস্ট্যান্ডে পৌর বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে রাজকীয় সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জাকারিয়া পিন্টু বলেন, ‘তিন দশক আগে পাবনার ঈশ্বরদীতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার মামলাটি ছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগের দলীয় গ্রুপিংজনিত মামলা। সেই মিথ্যা ভিত্তিহীন সাজানো মামলায় আমরা (বিএনপির) ৪৭ জন নেতাকর্মী ফরমায়েশী রায়ে কারাবন্দি ছিলাম। আমিসহ স্থানীয় বিএনপির ৯ জন শীর্ষ নেতা ফাঁসির আসামি হয়ে কারাগারে বন্দি ছিলাম।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদেশে পিন্টু বলেন, ‘ছাত্র-জনতার জীবন ও রক্তের গণ-অভ্যুত্থানের কারণে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আমরা মুক্তি পেয়েছি। দেশবাসী স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। এই কারণে ছাত্র-জনতার নিকট আমরা চিরঋণী। তাদের সকল কর্মকান্ডে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপি নিঃস্বার্থভাবে পাশে থাকবে। ঈশ্বরদীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা হামলা চালিয়েছে, গুলি বর্ষণ করে আহত করেছে, মারপিট, ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
জাকারিয়া পিন্টু বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি দলীয়ভাবে কঠোর বিচার ও শাস্তি দেওয়া হবে। তাই বিএনপির যেসব নেতা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হামলাকারী স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বাহিনী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীকে এখন নিজেদের ছত্রছায়ায় এনে বিএনপিতে পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন, তাদের নাম ও বায়োডাটা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রস্তত করে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মুক্তি সেইদিনই স্বার্থক হবে, যেদিন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে আনতে পারবো। তিনি বিদেশ থেকেও কারাবন্দি ঈশ্বরদীর ৪৭ নেতাকর্মীর খোঁজ রেখেছেন। পরিবারকে সহযোগিতা করেছেন। আমাদের মুক্তির জন্য সার্বিকভাবে কাজ করেছেন। একই সঙ্গে ৫ আগস্টের পর স্থানীয় বিএনপির নেতাদের কারণে কোন সাধারণ মানুষ কষ্ট পেলে, হামলা বা ভাঙচুরের শিকার হয়ে থাকেন তাহলে পৌর বিএনপির নেতা হিসেবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন জাকারিয়া পিন্টু।
এর আগে সকালে বিভিন্ন ধরনের ফুলে সজ্জিত শতাধিক পরিবহণ নিয়ে হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব পাবনা কারাগার থেকে জাকারিয়া পিন্টুকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন। এরপর মোটর শোভাযাত্রা নিয়ে আটঘরিয়া হয়ে ঈশ্বরদীতে সংবর্ধনা মঞ্চে আনা হয়। সেখানেই সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এসএম ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, অ্যাডভোকেট জামিল আক্তার এলাহী, রেল শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি আহসান হাবিব, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপি নেতা জাহিদুর রহমান পাতা, বিষ্টু সরকার, আব্দুর রাজ্জাক ফিরোজ, আমিনুর রহমান স্বপন, শামসুজ্জোহা পিপ্পু, আব্দুর রাজ্জাক, হুমায়ুন কবির দুলাল, সাহাবুদ্দিন সেন্টু, ইসলাম হোসেন জুয়েল প্রমুখ।