ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে ছাত্র সংসদ কোন কার্যক্রম নেই। তবুও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় হয় ছাত্র সংসদ ফি (দর্শনী/কর)। সরকারি এই কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাত হাজারের উপরে। প্রতিটি ছাত্রের কাছ থেকে প্রতিটি সেশনে ছাত্র সংসদ ফি বাবদ আদায় হয় ২৫ টাকা।
বর্তমানে ব্যাংক হিসাবের এই খাতে ২১ লাখ ৬ হাজার ১৭৯ টাকা ৭৫ পয়সা রয়েছে বলে জানা গেছে। দীর্ঘ সময় ধরে আদায়কৃত ছাত্র সংসদ ফি এর তহবিলে আরও অনেক বেশি অর্থ থাকার কথা।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই কলেজে ছাত্র সংসদের কোন কার্যক্রম নেই। ছাত্র সংসদ নির্বাচনও বন্ধ রয়েছে বহু বছর। সারা বছর তালাবন্ধ অবস্থায় থাকে ছাত্র সংসদের কক্ষ। তবুও আমাদের কাছ থেকে নেয়া হয় ছাত্র সংসদ ফি। তাহলে কেন নেয়া হয় ছাত্র সংসদ ফিস? কার্যক্রম ছাড়া সংসদ ফি আদায় করা মোটেই সমীচীন নয় ।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, আমরা শুনেছি অতীতে ছাত্র সংসদের ফিসের টাকায় কলেজে শরীর চর্চা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া অনুষ্ঠান, নাটক ও বার্ষিক ম্যাগাজিন বের করা হতো। এখন ছাত্র সংসদের ফিসের টাকায় কলেজের কি কাজ করা হয় সেটাও আমরা জানি না। সংসদ থাকলে কলেজ প্রশাসনের জবাবদিহিতা থাকে। জবাবদিহিতা না থাকায় স্বেচ্ছাচারমূলকভাবে কলেজের সকল কাজ পরিচালিত হচ্ছে। ছাত্র সংসদের কার্যক্রম চালু করার দাবী জানিয়ে তারা বলেন, অন্যথায় ছাত্র সংসদ ফিস নেয়া বন্ধ রাখতে হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এস এম রবিউল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছাত্র সংসদ ফি বাবদ যে টাকা নেয়া হয় তা ব্যাংকে গচ্ছিত আছে। উচ্চ মাধ্যমিক থেকে শুরু করে অনার্স পর্যন্ত ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন সরকার থেকে বন্ধ রয়েছে। কিন্তু ছাত্র সংসদের ফিস আদায় বন্ধের কোন কাগজ বা চিঠি কলেজে আসেনি। তাই ছাত্র সংসদের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও আমরা ফিস আদায় করে ব্যাংকে টাকা গচ্ছিত রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি যোগদানের সময় ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ৮১৮ টাকা ৭৫ পয়সা ব্যাংকে ছিল। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া ছাত্র সংসদের ফিসের ২১ লাখ ৬ হাজার ১৭৯ টাকা ৭৫ পয়সা বর্তমানে ব্যাংকের একাউন্টে জমা রয়েছে।