ঈশ্বরদীতে একটি অবৈধ কারখানায় ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা তৈরি করা হচ্ছে। উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের শেখেরচর-গোপালপুর এলাকায় অবস্থিত এই কারখানার ব্যাটারির অ্যাসিডের তীব্র গন্ধে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ। কারখানা থেকে বের হওয়া ক্ষতিকর ও বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) শফিকুল ইসলাম শামীম বলেন, ব্যাটারির বর্জ্য পুড়িয়ে সিসা তৈরি করলে তা আশপাশের মানুষের শরীরে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে, যার ফলে মানসিক বিকৃতি, রক্তশূন্যতা এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে। কারখানাটির পাশেই রয়েছে অনেক ফসলি জমি এবং অদূরে আসনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। কারখানাসংলগ্ন পদ্মা নদী পার হয়ে স্থানীয় সিসা তৈরির কারখানায় লোকজন চলাচল করে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পদ্মা নদীর তীরবর্তী সেখেরচক গ্রামে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে সিসা সংগ্রহের কারখানা চালাচ্ছেন আনোয়ার প্রামাণিক, দুলাল কর্মকার, আনারুল প্রামাণিকসহ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি। দিনে ব্যাটারি ভাঙার কাজ হলেও রাতের অন্ধকারে আগুন জ্বালিয়ে সিসা তৈরি করা হয়।
২০২১ সালে পরিবেশ অধিদপ্তরের পাবনা জেলা কার্যালয় থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠি দেয়া হলেও এখনো বন্ধ হয়নি এই অবৈধ কারখানাটি।
কারখানার ব্যবস্থাপক জানান, এক রাতে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ কেজি সিসা তৈরি হয়। এর জন্য প্রায় দেড় টন ব্যাটারির প্লেট লাগে। ব্যাটারির ওপরের অংশ প্লাস্টিক দ্রব্য তৈরিতে কাজে লাগে, যা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়। উৎপাদিত সিসা তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন চীনা ফ্যাক্টরিতে বিক্রি করেন। আরজাহান মাস্টার বলেন, এটি স্থাপন করার ফলে আশপাশের সব জমিতে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ফসল নষ্ট হচ্ছে। তাদের বললেই তারা বলে, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নিয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবীর কুমার দাশ বলেন, অবৈধ কারখানাটিতে অভিযান চালিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।