কার্ড প্রদান।
আসন্ন পূজার কার্ড দিয়ে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে মন্ডপ পরিদর্শনের দাওয়াত দিচ্ছেন হিন্দু নেতৃবৃন্দ।
জামায়াতকে নিয়ে হিন্দু ভাইদের মধ্যে একটা ভীতিকর অপপ্রচার চালানো হয়েছে, জামায়াতের সাথে হিন্দু ভাইদের চলাফেরায় ব্যারিকেড তৈরী করা হয়েছিল। জামায়াতের কাছে হিন্দু ভাইয়েরা আসলে এক পক্ষ তাদের চোখ রাঙানী দেখাতো। আমরা সবাই এক জাতি, এখানে সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই, এদেশে একজন মুসলমান যে অধিকার ভোগ করবে, একজন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান তিনিও একই অধিকার পাবেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য ও পাবনা জেলা আমির অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল।
শারদীয় দূর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বী সমাজের বিভিন্ন শ্রেনীর প্রতিনিধিদের নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার আলহাজ্ব মোড়স্থ দারুল সালাম ট্রাস্ট ভবনে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক আবু তালেব মন্ডল বলেন, আমরা স্বাধীনতার পক্ষ বিপক্ষ করে জাতিকে বিভক্ত করেছি, এটা খুবই দুঃখজনক ও ক্ষতিকর। এজন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিরা দায়ী। তিনি বলেন, আমরা হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই মিলেমিশে এদেশে বসবাস করতে চাই, যার যার ধর্ম সে সেটা প্রচার করবে, যেটা যার ভালো লাগে সেটা সে গ্রহণ করবে।
তিনি আরও বলেন, পাবনা জেলায় জামায়াতে ইসলামীর ১০০ হিন্দু সদস্য রয়েছে, হিন্দু থেকেও জামায়াতের সদস্য হতে পারবেন। তিনি তার নিজ ধর্ম পালন করবেন, এতে কোন বাঁধা নেই। এদেশে হিন্দুরা সব সময়ই নির্যাতিত হয়েছে কিন্তু জামায়াত এটির প্রতিকার করার কোন সুযোগ পাইনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঈশ্বরদীর হিন্দু ভাইদের পাশে জামায়াত সব সময়ই থাকবে, তাদের যে কোন মানবিক সহায়তায় জামায়াতকে জানালেই ভূমিকা রাখবে জামায়াত।
ঈশ্বরদী উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ড. নুরুজ্জামান প্রামাণিকের সভাপতিত্বে ও পৌর আমির মো. গোলাম আজম এর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সাইদুল ইসলাম, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুনীল চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক গণেশ সরকার, উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোপাল অধিকারী, উপজেলা হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল রায়, মৌবাড়িয়া মন্দির কমিটির যুগ্ম আহবায়ক স্বপন কুমার কুন্ডু, ডা. সুজয় কুমার কুন্ডু, হারু কুন্ডু, উৎপল সরকার, গোবিন্দ চৌধুরী প্রমূখ।
জামায়াত নেতৃবৃন্দের মধ্যে এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামায়াতের অফিস সম্পাদক মারুফ মো. আহসানউজ্জামান, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. বাকীবিল্লাহ খান, তারবিয়াত সেক্রেটারি মাওলানা আকাতুল্লাহ, আইন বিষয়ক সম্পাদক হাফিজুর রহমান খান, মিডিয়া সেক্রেটারি মাসুদ রানা মাসুম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি মাহফুজুর রহমান, সাঁডা ইউনিয়ন আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, সলিমপুর ইউনিয়ন আমির হাফেজ মাসউদুর রহমান, মুলাডুলি ইউনিয়ন আমির প্রভাষক মো. শাহিনুল আলম, দাশুড়িয়া ইউনিয়ন আমির মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম, সাহাপুর ইউনিয়ন আমির মাওলানা সানাউল্লাহ প্রমুখ।
সভায় ঈশ্বরদী উপজেলার ৩২টি পুজা মন্ডপের সভাপতি- সাধারণ সম্পাদকসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শতাধিক হিন্দু উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে হিন্দু নেতৃবৃন্দ আসন্ন পুজার কার্ড দিয়ে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে মন্ডপ পরিদর্শনের অনুরোধ জানান।