বিক্ষোভ |
এসএম স্কুল এন্ড কলেজের সামনে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর বিক্ষোভ সমাবেশ।
পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৫-২০ জনের একদল কিশোর গ্যাং কর্তৃক স্কুল কলেজগামী ছাত্রীদের যৌন নির্যাতন ও প্রকাশ্যে হেনস্থা করা এবং প্রতিবাদী ছাত্রদের পিটিয়ে আহত করার নানা ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
সরকারি মডেল এসএম স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান গেট, স্কুলের শহীদ মিনার ও খলিলের মোড়ে এসব কিশোর গ্যাং আড্ডা দেয়। সর্বশেষ গত বুধবার ছুটির পর স্কুলগেটের সামনে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রকাশ্যে যৌন নির্যাতন ও উত্যক্ত করার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার স্কুল চত্বরে স্থানীয় অভিভাবক ও অতিষ্ঠ এলাকাবাসীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী অভিভাবক মাসুম পারভেজ কল্লোল বলেন, বুধবার দুপুরে স্কুল ছুটির পর ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীকে নিরব হোসেনসহ কয়েকজন বখাটে ও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা তার গতিরোধ করে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে বাজে মন্তব্য করে। মেয়েটি কান্না করতে করতে বাসায় গিয়ে বাবা-মাকে বিষয়টি জানায়। এ খবরে তাৎক্ষণিক ঈশ্বরদী সরকারি মডেল সাঁড়া মাড়োয়ারী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) শহীদুল হক শাহীনকে অবহিত করে প্রতিকার চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি প্রতিকার না করায় স্থানীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা জানান, এর কয়েকদিন আগে কলেজ ছুটির পর একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে কলেজের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্যে বখাটের দল তার মোবাইল হাত থেকে কেড়ে নিয়ে শারিরিকভাবে হেনস্তা ও উত্যক্ত করে। এ ঘটনায় স্কুলে বিচারও করা হয়েছে।
এদিকে স্কুলের এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে স্কুল ক্যাম্পাসের মধ্যে ১৫-২০ জনের একদল বখাটে ওই শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারপিট করে।
ঈশ্বরদী সরকারি মডেল সাঁড়া মাড়োয়ারী স্কুল অ্যান্ড কলেজে ধারাবাহিকভাবে এসব ঘটনা নিয়ে স্থানীয়রা বারবার প্রতিকারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ সকালে অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এসে প্রতিবাদ ও ক্ষোভে ফেটে পড়েন। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বক্তব্য দেন অভিভাবক মাসুম পারভেজ কল্লোল, ফারজানা ফেরদৌস পুস্প, সঞ্জয় চৌধুরী, শাহরিয়ার নাফিজ স্বরণ, আলমাস নাঈম, আশিকুল ইসলাম পিয়াস, ফেরদৌস আলী মাহমুদ, আবির হোসেন, আরাফাত জামান প্রমুখ।
এসব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সরকারি মডেল সাঁড়া মাড়োয়ারী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) শহীদুল হক শাহীন বলেন, স্কুলে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনার বিচার ইতোমধ্যে করা হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বখাটে ও কিশোর গ্যাং মুক্ত করার।
ঈশ্বদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, বখাটেদের উৎপাত ও কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কয়েকটি ঘটনা শুনেছি। পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনাগুলো তদন্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।