ঈশ্বরদী বাজারে সাধারণ ক্রেতাদের সাথে প্রতিনিয়তই প্রতারণা করছে মুরগি ও মাংস ব্যবসায়ীরা। মুরগি কেনার পর ড্রেসিং এর নামে মরা মুরগি দিয়ে দিচ্ছে ক্রেতাদের। অন্যদিকে অসুস্থ এবং মৃত গরু মাংস ফ্রিজ এ রেখে সেই মাংস বাজারে দোকানে এনে সেগুলো জবাইকৃত গরুর রক্ত মাখিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। মুরগি বাজারে একাধিকবার মরা মুরগি দেওয়ার ঘটনা ধরা পড়ার পরেও কোন প্রতিকার হয়নি। থানায় অভিযোগের পরে গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে কিন্তু তারপরও থেমে নেই ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) ঈশ্বরদী বাজারে মিলনের মুরগির দোকানে একজন ক্রেতা তিনটি মুরগি কেনার পর ড্রেসিং করার সময় দেখেন দুটি মুরগি জবেহ করতে, বিক্রেতা একটি মরা মুরগি পূর্বেই পাশের ড্রামে রেখে দিয়েছিলেন যাতে ড্রেসিং করার নামে ক্রেতাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেওয়া যায়। তাৎক্ষণিক ওই ক্রেতা বিষয়টি বুঝতে পেরে এর প্রতিবাদ জানালে দোকানী বলেন, ড্রেসিংয়ের কাজ করা বাচ্চারা ভুল করেছে।
এদিকে, বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকালে মাংস বাজার থেকে পচা মাংস জব্দ করেন পৌরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আবু কাওছার সুজা। বাজারের মায়ের দোয়া গোস্ত ঘরের মালিক আরিফুল ইসলাম সকালে বাড়ির ফ্রিজ থেকে গরুর ৪ মণ মাংস একটি রিকশায় দোকানে আনার পর বিষয়টি পৌরসভার কসাইখানার ভারপ্রাপ্ত পরিদর্শক গোলাম রসূলের নজরে পড়ে। তিনি মাংসের কাছে গিয়ে দুর্গন্ধ পান। তাৎক্ষণিক তিনি স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আবু কাওছার সুজাকে বিষয়টি জানান। পরে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আবু কাওছার সুজা বাজারে এসে মাংস জব্দ করেন।
একটি সূত্র জানায়, বিয়েসুন্নতসহ বিশেষ করে অনুষ্ঠানের অর্ডার পেলে মুরগি ব্যবসায়ীরা অসুস্থ এবং মরা মুরগিগুলো ড্রেসিং করে বিক্রি করে দেয়। মাংস অর্ডার দিলেও ডেলিভারি দেওয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়মে তারা মরা মুরগি দিয়ে দেন। মাঝেমধ্যে ক্রেতাদের কাছে তাদের এসব প্রতারণা ধরা খেয়ে গেলে ক্রেতারা এর প্রতিবাদ জানালে আশেপাশের অন্যান্য মুরগী ব্যবসায়ী এবং মাংস ব্যবসায়ীরা নীরবতা পালন করেন। এতে বোঝা যায় এই প্রতারণার সাথে ওইসব ব্যবসায়ীরাও জড়িত রয়েছেন।
ঈশ্বরদী বাজারে এই মরা মুরগি এবং মৃত ও পঁচা গরুর মাংস বিক্রির বিষয়ে ক্রমেই ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বাড়ছে। জনস্বার্থে এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারী বৃদ্ধি এবং তদন্ত পূর্বক অসাধু ব্যবসায়ীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করেছেন ভুক্তভোগীরা।