বুধবার , ৩০ আগস্ট ২০২৩ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

সহায়তায় বিত্তবানরা এগিয়ে আসুন
ঈশ্বরদীর মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়ার সাফল্যে দারিদ্রতাই বড় বাধা

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
আগস্ট ৩০, ২০২৩ ১২:০২ পূর্বাহ্ণ

মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই বাবাকে হারিয়ে হয়েছে অনাথ। অভিভাবক শূন্য পরিবারে অভাবকে সঙ্গীকরে দারিদ্রতার কাধে চেপেই সফলতার ধারাবাহিকতার স্বাক্ষী মেধাবি সাদিয়া। মায়ের সামান্য উপার্জন আর মৃত বাবার ইচ্ছে এ দুটোকেই সম্বল হিসেবে নিয়েছেন তিনি। সেই সম্বলকে পুজি করে শিক্ষা জীবনে রচনা করে গেছেন সাফল্য গাথা ইতিহাস।

শিক্ষার প্রতি প্রবল ভালোবাসার সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রতিটি ধাপেই। যাপিত জীবনের কঠিন সময়কে উপেক্ষা করেও ৫ম শ্রেণীতে অর্জন করেন জিপিএ ৫। দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ বইতে না পেরে অসহায় আরিফা খাতুন বাধ্য হয়েই সাদিয়াকে তার ফুফুর বাড়িতে পাঠান জামালপুরের সরিষা বাড়িতে। কিন্তু অদম্য সাদিয়া হার না মেনে অষ্টম শ্রেনীতেও জিপিএ ৫ অর্জন করেন। একই বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানবিভাগ থেকে ২০২৩ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে অর্জন করেন গোল্ডেন জিপিএ -৫। কিন্তু এত ভালো ফলাফল করেও অর্থনৈতিক দৈন্যতায় তার লেখাপড়া এবার বন্ধ হওয়ার পথে।

ঈশ্বরদী উপজেলা রোডস্থ সাহানূর হার্ডওয়ারের মালিকের ছায়ায় থেকে সংগ্রামী জীবনযোদ্ধা সাদিয়ার মা আরিফা খাতুন বলেন, সাদিয়ার বাবা বায়িং হাউজের কন্ট্রোলার কোয়ালিটি পদে চাকরি করতেন। তার স্বপ্ন ছিল ছোট মেয়ে সাদিয়াকে ডাক্তার বানাবেন। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস তিনি দুই মেয়ের দ্বায়িত্ব আমাকে দিয়ে নিজে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন। তার রেখে যাওয়া স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে মেয়েটা এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন এ+ (জিপিএ ৫) পেয়েছে। কিন্তু দারিদ্রতা যে আমার পরম সঙ্গী তাই এত ভালো ফলাফল করার পরও তাকে বোধহয় এবার থামতে হবে। কেননা তাদের ঠিকমতো খেতেই দিতে পারিনা না। সেখানে দুজনের লেখাপড়ার খরচ বহন করব কিভাবে?

ঈশ্বরদী সরকারী কলেজের ¯স্নাতক তৃতীয় (কেমিষ্ট্রি) বর্ষের আরেক মেধাবী ছাত্রী সাদিয়ার বড় বোন বলেন, আমার বয়স যখন ১৪ বছর তখন আমাদের বাবা মারা যায়। আমাকে নিয়ে বাবার তেমন ইচ্ছে প্রকাশ না করলেও সাদিয়াকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্নের কথাটা বাবা প্রায়ই বলতেন। কিন্তু বাবা বেঁচে নেই তাই ডাক্তার বানানোর স্বপ্নটাও ফিকে হয়ে গেছে। আমি বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের খরচ নিজে চালিয়ে নিলেও সাদিয়ার পক্ষে সেটা করা সম্ভব নয়। তাই অভাবের কারনেই আমাদের স¦প্ন গুলো স্বপ্নই থেকে যায়। মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়ার পড়াশোনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে প্রতিবেশীরা বলেন, এতটা কষ্টে থেকেও সাদিয়ারা যেখাবে সাফল্য কোড়াচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তাদের পাশে মাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধও করেন অনেকে।

মেধাবী শিক্ষার্থী সাদিয়া বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন বাবা মারা যায়। মায়ের মুখে শুনেছি বাবার ইচ্ছে ছিলো আমাকে পড়াশোনা করিয়ে ডাক্তার বানাবে। আমি আমার মতো ভালোভাবেই পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলাম। মাধ্যমিক পরিক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করেছি।

তবে সবার কাছে শুনেছি উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনার খরচ বেশী। এবার আর হয়তো আমার পড়াশোনা হবে না। বন্ধ হয়ে যাবে পড়াশোনা। বাবার স্বপ্ন হয়তো আর পূরন হবেনা। আমি ডাক্তার হতে পারব না।

আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুর রহমান বিরু বলেন, আমি আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে সাদিয়ার ব্যাপারে কথা বলব। তারা যেনো সাদিয়ার পাশে দাঁড়ায়। সাদিয়ার মতো মেধাবী শিক্ষার্থীদের এ দেশে ভীষন দরকার।

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূবীর কুমার দাস দরিদ্র সাদিয়ার শিক্ষার ব্যবস্থা করার সম্মতি জ্ঞাপন করে বলেছেন, যেহেতু সাদিয়া একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তার মতো শিক্ষার্থী দেশ ও দশের উপকারে আসবে। আমি কথা দিলাম সাদিয়ার পাশে থাকব। তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে পড়াশোনা যাতে চালিয়ে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা আমি করব।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ