শনিবার , ৮ জুলাই ২০২৩ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

বিবাহ বিচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ : উদোর বোঝা বুদোর ঘাড়ে

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
জুলাই ৮, ২০২৩ ৩:৫০ অপরাহ্ণ

ঈশ্বরদীর ফতেমোহাম্মদপুর ফুটবল মাঠ সংলগ্ন এলাকার আতাউল্লার ছেলে মনোয়ার প্রায় ৩ বছর আগে বিয়ে করেন একই এলাকার মৃত মজিদের মেয়ে রোশনীকে। বিয়ের দেড় বছর পর মনোয়ার তার বউ রোশনীকে পারিবারিক কলহের কারণে তালাক দেন। তালাকের দেড় বছর অতিবাহিত হওয়ার পর সম্প্রতি মনোয়ারের দ্বিতীয় বিয়ের খবর প্রকাশ হয়। এতে তালাকপ্রাপ্ত রোশনী প্রাক্তন স্বামীর সাথে পুনরায় সংসার বাঁধতে মরিয়া হয়ে এলাকার বিভিন্ন মহলে তদবির শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি ঐ এলাকার মুরাদ হত্যা মামলাসহ ১৮ মামলার আসামী আবুল কাশেম লোলো এবং ১৪ মামলার আসামী গুল্লি পারভেজ এর শরণাপন্ন হন।

এই সুত্র ধরে গত ৪ জুলাই জোরপূর্বক ভাবে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে প্রাক্তন স্বামীর কাছে চাপিয়ে দেয়ার ঘটনায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে একজন গুরুতর জখম হয়েছে। ঘটনার মূল হোতাদের আড়াল করে নিরাপরাধীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করার অভিযোগও উঠেছে বাদীর বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দায়েরকৃত মামলায় মারপিটের মূল হোতাদের আড়াল করা হয়েছে। বাদী এক ঢিলে দুই পাখি নয়, কয়েক পাখি শিকারের পাঁয়তারা করছে। আসামীর সারিতে সাবেক পৌর কাউন্সিলর কামাল আশরাফি ও তার দুই ছেলের নাম দিয়েছে অবৈধ ভাবে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে। ইমন ও রিমন নামের দুজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকেও আসামী করা হয়েছে। কেননা মুক্তিযোদ্ধাদের উপর বাদীর পরিবারের অনেক আগে থেকেই এলার্জি, এরা মনেপ্রাণে স্বাধীনতা বিরোধী। একটি চক্রের প্ররোচনায় এলাকার একেবারে নিরীহ ছেলেদেরকে আসামী করা হয়েছে উক্ত মামলায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সুত্রে জানাগেছে, লোলো এবং গুল্লি পারভেজ মনোয়ারকে কয়েকদিন যাবৎ রোশনীকে পুনরায় বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। মনোয়ারও লোলো গং এর হাত থেকে রক্ষা পেতে এবং এদের প্রতিহত করতে নিউ কলোনী এলাকার কয়েকজন যুবকের কাছে আশ্রয় নেন।
এক পর্যায়ে গত ৪ জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এলাকায় লোলো ও গুল্লি পারভেজ গং এর সাথে মনোয়ার ও তার পরিবারের বাক বিতন্ডা শুরু হয়। মনোয়ারের ভাড়া করা অজ্ঞাত ৪/৫ জন যুবক লোলো ও গুল্লি পারভেজকে পিটানোর প্রস্তুতি নিয়েই ছিল। সন্ধ্যায় শুরু হওয়া বাক বিতন্ডা চলতেই থাকে। প্রায় দুইশত মানুষের জটলায় রাস্তায় গাড়ি চলাচল বিঘ্নিত হয় কয়েক ঘন্টা। সমস্যা সমাধানে স্থানীয় ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর ওয়াকিল আলম এসে ব্যর্থ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
এদিকে রাত সাড়ে ১০টায় ঐ এলাকার সাবেক কাউন্সিলর কামাল আশরাফি ঈশ্বরদী বাজারস্থ মদিনা স্টোর নামের তার নিজ দোকান বন্ধ করে পুত্র পাপ্পুকে সাথে করে বাড়ির পথে রওয়ানা হয়। বাড়ির সামনে লোক সমাগম ও চিৎকার চেঁচামেচি দেখে রিকশা দাঁড় করায়। বর্তমান কাউন্সিলর ওয়াকিল আলম এগিয়ে এসে সাবেক এই কাউন্সিলরকে জটলা বাধার কারণ খুলে বলতে লাগে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এসময় ভীড় ঠেলে এসে লোলো সাবেক এই কাউন্সিলরকে ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার জন্য ধমক ও গালিগালাজ দিতে শুরু করে। কামাল আশরাফি গালাগালির কারণ কি জানতে চাইলে লোলো আরো উত্তেজিত হয়ে উঠে। ঠিক সেই সময়ই আগে থেকে ওত পেতে থাকা মনোয়ারের পক্ষ নেয়া অজ্ঞাত কয়েকজন যুবক গুল্লি পারভেজকে মারপিট শুরু করে। অবস্থা বেগতিক বুঝে লোলো পালিয়ে যায়। চোখের পলকে গুল্লি পারভেজকে পিটুনি দিয়ে গ্রুপটি সটকে পড়ে। ঝড়ের গতিতে ঘটা অবস্থা দেখে কামাল আশরাফিসহ উপস্থিত শতশত প্রত্যক্ষদর্শীরা হতভম্ব হয়ে যায়।

গুল্লি পারভেজের লোকজন তাৎক্ষণিক এ্যাম্বুলেন্সে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

ঘটনার ২দিন পর গত ৬ জুলাই রাতে গুল্লি পারভেজের স্ত্রী শাহানা খাতুন বাদী হয়ে কামাল আশরাফি, তার দুই ছেলে পাপ্পু ও হাসানসহ ১১জনকে আসামী করে ঈশ্বরদী থানায় মামলা করেন।

শাহানা খাতুন বলেন, কামাল আশরাফি এবং তার ছেলে পাপ্পুসহ তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমার স্বামীকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেছে।

সাবেক কাউন্সিলর কামাল আশরাফি বলেন, রাত সাড়ে দশটার দিকে আমি বাজারের দোকান বন্ধ করি। বাড়ির কাছে পৌছালে অনেক মানুষের ভিড় দেখে আমি এবং আমার ছেলে দাঁড়াই এবং জানতে পারি বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে একটি সালিশ হচ্ছিলো সেখানে। সালিশের মাঝেই লোলো ও গুল্লি পারভেজ আমাকে গালিগালাজ করতে থাকে। এরই মধ্যে অজ্ঞাত কে বা কারা ঝড়ের গতিতে এসে গুল্লি পারভেজকে মারপিট করেন। বুঝে উঠার আগেই ওরা হাওয়া হয়ে যায়। এর বাইরে আমি আর কিছুই জানিনা। আমি সারাদিন দোকানে বেচাকেনায় কেমন ব্যস্ত ছিলাম তা আমার দোকানের সিসি ফুটেজ দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন। কারো সাথে গ্যাঞ্জাম করার আমার সময় কোথায়?
এ বিষয়ে আবুল কাশেম লোলোর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, বাদীর লিখিত এজাহারটি মামলা হিসেবে এন্ট্রি করা হয়েছে। সত্য মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ রয়েছে। তদন্ত করে প্রকৃত সত্য ঘটনাটিই আমরা নিবো।

এলাকাবাসীরা বলছেন, এই ঘটনার সাথে সরাসরি ভাবে আরমান হোসেন ওরফে মুরগী আরমান জড়িত। অথচ ওর কোথাও নাম নেই। উদোর বোঝা বুদোর ঘাড়ে চাপানোর হীন চেষ্টা ঠিক না। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে নিরীহদের ফাঁসানোর এই চেষ্টায় লাভ কার কতখানি হবে সেটাই দেখার বিষয়।

 

 

প্র, ০৮.০৭.২০২৩

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

আপনার জন্য নির্বাচিত

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ