কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে পানি। শনিবার ( ৮ জুলাই ) পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ৮ দশমিক ৬২ মিটার। প্রতিদিন পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে ৩০ সেন্টিমিটার করে। পানি বেড়ে যাওয়ায় পদ্মার কূলে জমি ও ফসল তলিয়ে গেছে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উত্তরাঞ্চল পানি পরিমাপক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী ভেড়ামারা সেকশনে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন জানান, ১ জুলাই থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী জানা গেছে, পাকশীর পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির পরিমাপ রেকর্ড করা হয় গত ১ জুলাই ৬ দশমিক ৮৬ মিটার। ২ জুলাই ৬ দশমিক ৮৩ মিটার, ৩ জুলাই ৭ দশমিক ০৯ মিটার, ৪ জুলাই ৭ দশমিক ৫৩ মিটার, ৫ জুলাই ৭ দশমিক ৭২ মিটার। ৬ জুলাই ৭ দশমিক ৯৫ মিটার, ৭ জুলাই ৮ দশমিক ৩২ মিটার এবং ৮ জুলাই ৮ দশমিক ৬২ মিটার পানি রেকর্ড করা হয়। পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ৮০ মিটার বলে জানান তিনি।
পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্রেজ রিডার হারিসুন নাঈম ইবনে সালাম বলেন, প্রতিদিনই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মায় ৩০ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে।
উত্তরাঞ্চল পানি পরিমাপক বিভাগ ও পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, সাতদিন পর পর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়। গত সোমবার ৩ জুলাই হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সর্বশেষ পানির পরিমাণ রেকর্ড করা হয় ১ লাখ ৯৮ হাজার ০১১ কিউসেক। পদ্মায় পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বর্ষায় বিপৎসীমার কাছাকাছি গিয়ে ঠেকতে পারে।
এদিকে পদ্মায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার অসংখ্য কৃষকের আবাদ করা ফসল এরই মধ্যে তলিয়ে গেছে। ভেড়ামারা চর গোলাপনগর এলাকার চরে আবাদ করা বেশির ভাগ বাদামক্ষেত, পাটসহ অন্য ফসল এখন পানির নিচে।
সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি স্প্যানের মধ্যে ১৩টির নিচেই এখন স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। পানিতে ভরে গেছে পদ্মানদীর ভেড়ামারা-পাকশী দুই কূল।
ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি অফিসার শায়খুল ইসলাম জানান, এ মৌসুমে পদ্মার চরাঞ্চলে বিভিন্ন ফসলের আবাদ হয়েছে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে। নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার আবাদি ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।
চর গোলাপনগর গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, চরে আমার তিন বিঘা জমির ফসল পুরোটাই এখন পানিতে থই থই করছে। কৃষক জমির উদ্দীন বলেন, এ বছর পদ্মার চরে ৫ বিঘা জমিতে মাষকলাই চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু পদ্মার পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সব ফসল তলিয়ে গেছে।