শুক্রবার , ৯ জুন ২০২৩ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

ঈশ্বরদীর শিক্ষার্থীদের ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ
পকেটখরচ বাঁচিয়ে রিকশা চালকদের পানি ও স্যালাইন বিতরণ

প্রতিবেদক
আমাদের ঈশ্বরদী রিপোর্ট :
জুন ৯, ২০২৩ ৬:৪৭ অপরাহ্ণ

প্রচন্ড তাপপ্রবাহে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ। দিনমজুর ও রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে খেটে-খাওয়া নিরন্ন মানুষ যখন পরিশ্রান্ত। যখন কায়িক পরিশ্রম করে বাড়ি ফেরার সময় তেষ্টায় তাদের গলা শুকিয়ে কাঠ তখন রাস্তার মোড়ে মোড়ে পরিশ্রান্ত ও কাতর এসব মানুষদের মুখে ঠান্ডা পানি তুলে দেওয়ার ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ঈশ্বরদীর বেশ কিছু শিক্ষার্থীরা।

বিভিন্ন স্কুল-কলেজে পড়ুয়া এসব শিক্ষার্থীরা নিজেদের পকেট খরচ বাঁচিয়ে বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি ও খাবার স্যালাইন সরবরাহ করছে। নিম্ন ও কায়িক পরিশ্রমি এসব দিনমজুরদের হাতে তারা তুলে দিচ্ছে পানি ও খাবার স্যালাইন।

বুধবার (৭ জুন) শহরের কলেজ রোড, হাসপাতাল রোড, মেইন রোডসহ বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে কোথাও দলবদ্ধ হয়ে আবার কোথাও দু-তিন জন পানি হাতে শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। রাস্তা দিয়ে কোন রিকশা চালক বা পরিশ্রান্ত মানুষ এলেই তাদের হাতে তারা তুলে দিচ্ছে ঠান্ডা পানি ও খাবার স্যালাইন।

কলেজ রোডে চলতি পথে রিকশা চালক জামাল হোসেন বলেন, জান বাইর হওয়ার মত এই গরমে ও কাঠফাটা রোদে রিকশা চালাইতে চালাইতে গলা শুকিয়ে কাঠ। ঢোকও নামেনা গলা দিয়ে। এই সময়ে রাস্তায় এক বোতল ঠান্ডা পানি পেয়ে পরানটা ঠান্ডা হয়ে গেল। এই ছাত্রদের আল্লাহ বাঁচায়ে রাখুক। দিনমজুর রওশন আলম বেলাল বলেন, কাজ শেষে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় এভাবে ঠান্ডা পানি পাবো তা ভাবি নাই। ঘামে গোসল অবস্থায় এই পানিতে গলা ভিজিয়ে কি যে আরাম পাইলাম তা বোঝানোর মত নয়।

কলেজ ছাত্র তৌফিক হাসান রাফাত বলেন, কয়েকদিন আগে আমরা বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেওয়ার সময় পরিশ্রমি মানুষদের পানি ও স্যালাইন খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেই। বন্ধুরা প্রত্যেকে নিজেদের পকেট খরচ থেকে ১০০ টাকা করে জমাই। পরে সেই জমানো টাকায় পানি ও স্যালাইন কিনে কয়েকজন করে গ্রুপে ভাগ হয়ে বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে পানি ও স্যালাইন বিলি করি।

মোঃ মেহেদী হাসান জানান, আমরা এই কাজ করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে অন্যরকম এক আনন্দ অনুভব করছি। প্রায় ৫০ জন বন্ধুরা ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও মোবাইলে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে সবাই মিলে ‘ইউনিটি ক্লাব’ গঠন করে এ ধরনের মানবিক কাজ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। আমরা ঈশ্বরদীর বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি ও স্যালাইন বিতরণ করতে পেরে মানুষের নিকট থেকে অনেক দোয়া ও ভালবাসা পাচ্ছি। এতেই আমরা আনন্দিত।

তৌফিক হাসান রাফাত, মোঃ দিগন্ত বিশ্বাস, মোঃ সাকিব হাসান, জিসান আহমেদ তালহা, মোঃ- সাদাপ আলমাস। মোঃ মেহেদী হাসান। শ্রী বিকাশ কুমার, মোঃ নাবহান রহমান রাফিদ, আলী হাসেমী রাফসান জানি রাফি, মোঃ রাহুল বিশ্বাসসহ এসব শিক্ষার্থীরা এ ধরনের স্বেচ্ছাসেবী কর্মকান্ডে যুক্ত হয়ে নিজেদের ব্যাবহার করা জামা-কাপড় সংগ্রহ করে আসছে ঈদের আগে অসহায় ছিন্নমূল মানুষদের মাঝে বিতরণ করার উদ্যোগও নিয়েছেন বলে জানান। ইতোমধ্যে মনবতার দেওয়াল স্থাপন করে সেখানে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুরনো কাপড়-চোপড় ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থাও নিয়েছেন। ইদের আগে তারা কর্মহীন মানুষের হাতে রান্না করা খাদ্য ও ইদের বাজার করে দেওয়ারও উদ্যোগ নিয়েছে।

পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, আজকের এসব উদ্যোমী শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। ওদের এসব উদ্যোগ দেখে আমিও খুশি হয়েছি। ঈশ্বরদী পৌর কর্তৃপক্ষও এসব শিক্ষার্থীদের এই ‘ভালো কাজে’র সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করেছি।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

error: Content is protected !!