পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় ছাত্রলীগ কর্মী তাফসির আহম্মেদ মনা (২৩) হত্যার ঘটনায় এজাহারভুক্ত আসামি পাকশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান শিমুল (৩৭) ও দুই যুবলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলা দায়েরের পর সোমবার (১৯ জুন) রাতে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলমের নেতৃত্বে ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করেন।
মঙ্গলবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) হাসান বাশির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার (১৭ জুন) রাতে উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের এমপির মোড়ে গুলি করে হত্যা করা হয় তাফসির আহম্মেদ মনাকে।
নিহত মনা ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের দিয়াড় বাঘইল গ্রামের রূপপুর পাকার মোড় সংলগ্ন সৌদি আরব প্রবাসী তানজিল আহমেদ তুহিনের ছেলে।
সোমবার (১৯ জুন) গভীর রাতে নিহত মনার মা নাহিদা আক্তার লিপি বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এতে যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের ১৭ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা হিসেবে আরও ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা নং-৩৭।
গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামি হলেন- ঈশ্বরদী উপজেলার নতুন রূপপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে ও পাকশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবল হাসান শিমুল (৩৭), লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামের কালা (৫৫) ও শহরের রেলগেট এলাকার মৃত. আব্দুল বারির ছেলে মো. হাবু।
মামলার এজাহার সূত্র জানায়, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নে শত্রুতা জের ও পদ্মা নদী ও কৃষি জমি থেকে মাটি এবং বালু কাটাকে কেন্দ্র করেই বিগত মাস খানেক ধরে প্রতিপক্ষ অবুজ ও লিটন গ্রুপের সঙ্গে মনার পক্ষের শাহিনের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিলো। ঘটনার দিন শনিবার (১৭ জুন) বিকেলে পরিকল্পিতভাবে মনাকে বাড়ি থেকে আসামি হাবু ডেকে নিয়ে ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নের নবীনগর এমপি মোড়স্থ পাবনা ট্যাংক লরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে যান। সেখানে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বসিয়ে রেখে আসামিরা এলোপাতাড়িভাবে গুলি করে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মনাকে আহত করেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় নিহত মনার মা নাহিদা আক্তার লিপি বাদী হয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অবুজকে প্রধানসহ ১৭ জনকে নামীয় ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা দায়েরের পর অভিযান চালিয়ে যুবলীগ কর্মী হাবু ও কালাকে ঈশ্বরদী থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি শিমুলকে রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।
ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, এজাহার দায়েরের পর থেকে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে উপজেলা ও রাজশাহী থেকে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়ার পর বুধবার (২১ জুন) তাদের আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলহাজতে পাঠানো হবে।