মঙ্গলবার , ৯ মে ২০২৩ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

ঈশ্বরদীতে পেট্রল ঢেলে স্ত্রীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দিল পাষণ্ড স্বামী

প্রতিবেদক
আমাদের ঈশ্বরদী রিপোর্ট :
মে ৯, ২০২৩ ৬:২৪ অপরাহ্ণ

পাবনার ঈশ্বরদীতে স্ত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মাদকাসক্ত পাষণ্ড স্বামী রনি সরদার (৩২)। গতকাল সোমবার দুপুরে ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গরুর হাট সংলগ্ন রানার চায়ের দোকানে নৃশংস এই ঘটনা ঘটে। রনি ওই এলাকার রমজান সরদারের ছেলে। আর আহত গৃহবধূ নিলুফা ইয়াসমিন হ্যাপী (২৫)। তিনি নেত্রকোনার উলুকান্দার আব্দুল লতিফ আকন্দের মেয়ে।

এলাকাবাসী ও থানা সূত্র মতে, রনি একজন মাদকাসক্ত। আওতাপাড়া হাটসহ আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ মাদকের কারবারি। ৩ বছর আগে ফেসবুকে রনির সঙ্গে হ্যাপীর পরিচয় হয়। সেই পরিচয় থেকে প্রেম ও বিয়ে হয়। এটা তার দ্বিতীয় বিয়ে। তাই ঘরে স্ত্রী ও দুইটি মেয়ে আছে। বড় মেয়ের বয়স ১৪ এবং ছোট মেয়ের বয়স ৬ বছর।

তিনি হ্যাপীকে রূপপুরে বাসা ভাড়া করে রাখেন। হ্যাপী মাঝে মধ্যে তার বাড়িতে যেতে চাইলে রনি তাকে মারপিট করতেন। এতে তার সন্দেহ হয়।

ঘটনার দিন দুপুর ১টার দিকে হ্যাপী গোপনে রনির বাড়ির খোঁজে আওতাপাড়ায় যান। এরপর মোবাইলে রনির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। নিজের গোপন তথ্য হ্যাপী জেনে যাওয়ার ভয়ে তাকে আওতাপাড়া গরুর হাট সংলগ্ন রানার চায়ের দোকানি বসতে বলেন। পরে রনি তার দুই বন্ধু স্থানীয় পলাশ ও হাফিজকে নিয়ে হ্যাপীর নিকট আসেন। তাকে না জানিয়ে আওতাপাড়ায় আসায় তাকে গালাগালি করেন তিনি। এক পর্যায় দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় রনি ক্ষিপ্ত হয়ে বন্ধু পলাশকে দিয়ে পেট্রল আনিয়ে হ্যাপীর গায়ে ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।



এদিকে সবকিছু জানার পরও স্বামী ও তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে এখন হাসপাতালে দেখভাল করছেন রনির প্রথম স্ত্রী সুমি খাতুন (২৮)।

জানতে চাইলে সুমি খাতুন বলেন, তাদের বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া। তাদের দুইটি মেয়ে আছে। বড় মেয়ের বয়স ১৪ এবং ছোট মেয়ের বয়স ৬ বছর।
স্ত্রী ও দুই মেয়ে রেখেই তার স্বামী রনি সরদার ময়মনসিংহের হ্যাপিকে বিয়ে করেন। প্রায় চার বছর আগে হ্যাপির সঙ্গে রনির পরিচয় হয় ফেসবুকে। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অবৈধ মেলামেশা করায় চাপের মুখে প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়েই তার স্বামী রনি ওই হ্যাপিকে বিয়ে করেন। এরপর তারা গোপনে ঈশ্বরদীর রূপপুরে বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করেন। পরে এ বিষয়টি পরিবারের মধ্যে জানাজানি হয়। এরপর থেকে রনি তাদের সাথেও থাকতেন আবার দ্বিতীয় স্ত্রী হ্যাপি বাড়িতেও যাতায়াত করতেন। কিন্তু বেশ কিছুদিন থেকে হ্যাপি কেবল তার সাথেই ঘর সংসার করার জন্য রনিকে চাপ দেন। কিন্তু রনি তার প্রথম স্ত্রী ও দুই সন্তানকে ছাড়তে পারবেন না বলে জানান। এ নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী সাথে রনির প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকতো। এর আগে বিভিন্নভাবে হ্যাপি কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন।



ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, সোমবার রাতে বিষয়টি তারা জানতে পারেন। পরে পাবনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সিসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন জানান, হ্যাপির শরীরের ৩২ শতাংশ এবং রনি ৭ শতাংশ পুড়ে গেছে। রনি আশঙ্কামুক্ত। তবে পেট্রলের আগুনের কারণে হ্যাপির অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আফরোজা নাজনীন বলেন, হ্যাপির শরীরের ৩২ শতাংশ পুড়ে গেছে এবং রনি সাত শতাংশ পুড়েছে। তাই তিনি আশঙ্কামুক্ত। তবে পেট্রলের আগুনের কারণে হ্যাপির অবস্থা আশঙ্কাজনক।

দগ্ধ হ্যাপিকে ঢাকা স্থানান্তরের জন্য বলা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রামেক হাসপাতাল বার্ন ইউনিটের প্রধান।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

error: Content is protected !!