পাবনার ঈশ্বরদীতে ট্রেনের ইঞ্জিন থামিয়ে তেল চুরির সময় ৫০ লিটার তেলসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে ইঞ্জিনটি ঈশ্বরদীতে আসছিল। এ ঘটনায় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় ওই ইঞ্জিনের চালক ও সহকারী চালককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাতিবিল তিনকোনা পুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
সাময়িক বরখাস্ত ব্যক্তিরা হলেন—চালক তারিক আজাদ (৪৮) ও তাঁর সহকারী শাহিন রেজা (৪২)। অন্যদিকে তেলসহ গ্রেপ্তার দুজন হলেন—ঈশ্বরদী উপজেলা সদরের উমিরপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম (৩৫) ও আলিফ মিয়া (১৮)।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাতে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে ট্রেনের একটি ইঞ্জিন (নম্বর-৬৫৩২) ঈশ্বরদীতে আসছিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন আসার আগেই তিনকোনা পুকুর এলাকায় ইঞ্জিনটি থামিয়ে তেল চুরি শুরু হয়। বিষয়টি টের পেয়ে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে অভিযান চালিয়ে ৫০ লিটার তেলসহ হাতেনাতে দুজনকে আটক করে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী আশীষ কুমার মণ্ডল বলেন, ঘটনা জানার পরই ইঞ্জিনের চালক ও সহকারী চালককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাকশী বিভাগীয় সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দেবে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত ইঞ্জিনের চালক ও সহকারী চালককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার (জিআরপি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিহির রঞ্জন দেব বলেন, তেল চুরির ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে রেলওয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে এক কর্মকর্তা দাবি করেন, ‘আসলে তেল কখনোই চুরি হয় না। দক্ষ চালক তাঁর প্রাপ্ত রেশন থেকে যে পরিমাণ তেল বাঁচান, তা বাইরে ফেলে দেন অথবা একটি সংঘবদ্ধ তেল চোরের কাছে বিক্রি করে দেন।’
তিনি আরও বলেন, রেশনে পাওয়া তেল চালক তাঁর দক্ষতা দিয়ে বাঁচালেও পুরষ্কৃত করার বিধান না থাকায় তাঁরা এর অপব্যবহার করেন। অন্যদিকে চালকেরা কোনো কারণে রেশনের অতিরিক্ত তেল খরচ করলে তাদের জরিমানা দিতে হয়।