মঙ্গলবার , ২৮ মার্চ ২০২৩ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

সত্যেন সেন : প্রগতির পদাতিক

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
মার্চ ২৮, ২০২৩ ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ

প্রগতিশীল চিন্তাধারা সমাজের তলদেশ অবধি সঞ্চারিত করার প্রচেষ্টা সত্যেন সেন (২৮ মার্চ ১৯০৭ – ৫ জানুয়ারি ১৯৮১) নিয়েছিলেন। তাই তিনি সংস্কৃতির সঙ্গে জীবনকে যুক্ত করার বিপুল কর্মকাণ্ডেরও আয়োজন করে গেছেন। আর তাই তাকে চিনতে হলে তার কর্মভাণ্ডার জানতে হবে।

সত্যেন সেন যেখানেই হাত দিয়েছেন সেখানেই সোনা ফলিয়েছেন। তিনি জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার সংগ্রাম। তার জন্য কৃষক-শ্রমিক-মধ্যবিত্ত অধ্যুষিত এই দেশে ব্যাপক গণজাগরণ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা তিনি অনুভব করেছিলেন, যে ধারণা তিনি অর্জন করেছিলেন মার্ক্সবাদ থেকে।

জীবনের প্রথম ধাপেই তার মনে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মনোভাব দানা বাধতে থাকে। তারই সূত্র ধরে ত্রিশের দশকে তিনি যুক্ত হন গোপন বিপ্লবী দল ‘যুগান্তর’-এর সাথে। এই সময় তিনি পর পর দু’বার কারাবরণ করেন।

দ্বিতীয়বার মুক্তি পাওয়ার পর তিনি গ্রামে চলে যান এবং সেই সময় কৃষক সমিতি গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। চল্লিশের দশকে একজন পুরোদস্তুর কৃষক আন্দোলনের কর্মীতে পরিণত হন। একই সাথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের নানা কারখানায় শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়নে সংগঠিত করার কাজে উদ্যোগী হন।

এরই মধ্যে ইংরেজ শাসকের কারসাজিতে ১৯৪৩ সালে খাদ্যের দাম বেড়ে যায়। তিন টাকার চাল চৌদ্দ টাকা হয়ে যায়। বাংলার বুকে নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, যা পঞ্চাশের মন্বন্তর নামেও পরিচিত। সেই দুর্ভিক্ষে অসংখ্য নরনারী, শিশু অনাহারে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

সত্যেন সেন বামপন্থী ধারার উত্থানে বিশ্বাসী একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদী জীবনবোধ সম্পন্ন ধারা প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।


মানুষের বেদনার এই চরম মুহূর্তে তিনি জাগরণী গান নিয়ে নেমে পড়েন দুর্ভিক্ষ বিরোধী সংগ্রামে। সত্যেন সেন তখনকার সেই পটভূমিতে রচনা করেন—

‘চাউলের মূল্য চৌদ্দ টাকা
কেরোসিন তেল নাইরে
কেরোসিন তেল নাই
হায় কি করি উপায় রে
কি করি উপায়।’

ষাটের দশকে এসে তার সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন আরও গতি লাভ করে। এই সময় তিনি একজন সৃজনশীল লেখক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত হন।

কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেও যখন এই ভূখণ্ডের মানুষকে নিবৃত্ত করা যায়নি তখন সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শাসক নতুন চক্রান্তের জাল বুলতে থাকে। তারা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়াতে থাকে সাম্প্রদায়িকতার আগুন।

যে আগুনে অঙ্গার হয়ে দ্বিখণ্ডিত হয়েছে ভারত-পাকিস্তান। হিন্দু-মুসলিম ভাইয়ে ভাইয়ে দাঙ্গা হয়েছে। দাঙ্গার বিরুদ্ধে মানুষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সত্যেন সেন লিখেছেন—

‘ও যারা দাঙ্গা করে মানুষ মারে
বুঝে নারে পথের গতি,
ও যারা দাঙ্গা করে
সে কি কভু চিন্তা করে
এটাই আমার দেশের ক্ষতি…।’

সত্যেন সেন বামপন্থী ধারার উত্থানে বিশ্বাসী একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদী জীবনবোধ সম্পন্ন ধারা প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।

১৯৬৮ সালে গড়ে তোলেন তার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের সংগঠন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। যা সত্যেন সেনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার সে কীর্তি আজ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়।


আজ যখন সাম্প্রদায়িক শক্তির নির্লজ্জ আস্ফালন, সীমাহীন স্পর্ধায় বাঙালি জাতির সব অর্জন ধ্বংসের মুখোমুখি তখন এর প্রয়োজনীয়তা, গুরুত্ব শতগুণে বেড়ে গেছে। সত্যেন সেন জীবিত থাকলে তিনি এ রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের পুরোভাগে থাকতেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

ষাটের দশকে তিনি অনেক বেশি বেশি করে সাহিত্যকর্মে মনোনিবেশ করেন। তবে তিনি কেবলই সাহিত্যিকের খাতায় নাম লেখানোর জন্য সাহিত্য রচনা করেননি।

সংগ্রামী জীবনের দায়িত্ব পালনের জন্য মেহনতি মানুষের সংগ্রাম ও সমাজ প্রগতির সংগ্রাম শাণিত করে তোলার জন্য সাহিত্যকর্মে নিয়োজিত হয়েছিলেন। তার সাহিত্যের মুখ্য বিবেচনা মেহনতি মানুষ ও তাদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম।

মেহনতি মানুষের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্না, চাওয়া-পাওয়া আর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা সত্যেন সেনের সাহিত্যের মূল প্রতিপাদ্য। তিনি ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত জেলে বসে লেখেন ‘রুদ্ধদ্বার মুক্ত প্রাণ’।

একে একে লিখতে থাকেন ‘মহাবিদ্রোহের কাহিনী’, ‘ভোরের বিহঙ্গী’, ‘গ্রাম বাংলার পথে পথে’, ‘অভিশপ্ত নগরী’, ‘মসলার যুদ্ধ’, ‘পাতাবাহার’, ‘সেয়ানা’, ‘ইতিহাস ও বিজ্ঞান’, ‘পদচিহ্ন’ ইত্যাদি।

১৯৬৮ সালে গড়ে তোলেন তার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের সংগঠন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। যা সত্যেন সেনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তার সে কীর্তি আজ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়।

এই সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের উদ্ভব পর্ব থেকে আজ অব্দি সত্যেন সেনের প্রদর্শিত পথে তার যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। তার সাহিত্য, সংগীত এবং সংগ্রামের উত্তরাধিকার বহন করে তারই স্বপ্নের সারথিরা যেদিন সারা বিশ্বের তরুণ সমাজের মধ্যে প্রাণের স্পন্দন তৈরি করতে সক্ষম হবে, বিনির্মাণ করতে পারবে শোষণ-বঞ্চণাহীন অসাম্প্রদায়িক সমাজ সেদিন সত্যেন সেনের স্বপ্ন কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাবে।

অমিত রঞ্জন দে ।। সংস্কৃতিকর্মী ও সহ-সাধারণ সম্পাদক, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

আপনার জন্য নির্বাচিত

ঈশ্বরদী : গাড়িতে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধারের ঘটনায় সেই দম্পতির নামে মামলা

৪ বছর ধরে পড়ে আছে ২ কোটি টাকার ঈশ্বরদী মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রূপপুর প্রকল্পে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রূপপুর প্রকল্পে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ঈশ্বরদী শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম : খেলার বদলে চরে গরু

চাপ কমবে বঙ্গবন্ধু, লালনশাহ ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজে : পদ্মা সেতু বদলে দেবে উত্তরাঞ্চলের চিত্রও

চাপ কমবে বঙ্গবন্ধু, লালনশাহ ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজে : পদ্মা সেতু বদলে দেবে উত্তরাঞ্চলের চিত্রও

প্রতারণার শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত ক্রেতারা
ঈশ্বরদী বাজারে বিক্রি হচ্ছে মৃত গরুর মাংস ও মরা মুরগি

জানুয়ারিতে আসছে শৈত্যপ্রবাহ, তীব্র হতে পারে একটি

জানুয়ারিতে আসছে শৈত্যপ্রবাহ, তীব্র হতে পারে একটি

লালপুরে সাপের কামড়ে কৃষকের মৃত্যু

সেই আসপিয়ার চাকরির ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

সেই আসপিয়ার চাকরির ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ

Gfinity launching competitive league for teams to draft amateur players

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ