বিলবোর্ড টাঙিয়ে অভিনব কায়দায় দোয়া চেয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসা পাবনার বেড়া উপজেলার সেই পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। সোমবার( ২৮ নভেম্বর) সকালে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে।
জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন বেড়া উপজেলার কাবাসকান্দা গ্রামের ইফতেখার উদ্দিনের ছেলে সুয়াইব আহমেদ সাহেদ, নয়াবাড়ি গ্রামের মোহন মোল্লার ছেলে নাহিদ হাসান, দ্বারিয়াপুর গ্রামের খন্দকার শহিদুল্লার ছেলে সামি খন্দকার ও একই গ্রামের খন্দকার আব্দুল্লাহ আল মামুনের ছেলে খন্দকার মাশরাফি।
এসব শিক্ষার্থী উপজেলার কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তারা পরস্পরের বন্ধু।
জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান ও সুয়াইব আহমেদ সাহেদ বলেন, ‘জিপিএ-৫ পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। আমাদের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন সবাই খুশি। করোনার মাঝে পড়াশোনা খুব একটা ভালো হয়নি। তারপরও চেষ্টা করেছি ভালো করার। যদিও আমাদের মধ্যে একজন অমিত হাসান রাফিদ রেজাল্ট খারাপ করায় খারাপ লাগছে।’
বিলবোর্ড টাঙিয়ে দোয়া চাওয়ায় কতটুকু কাজে লেগেছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘অবশ্যই কাজে লেগেছে। দেশবাসীর দোয়া ছিল এবং নিজেরা পরিশ্রম করেছি বলেই ভালো ফল পেয়েছি। সেইসঙ্গে শিক্ষকদের সহযোগিতাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্কুলের পাঁচজন ছাত্র অভিনব কায়দায় দোয়া চাওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। বিষয়টিকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখেছিলাম। ভালো লাগছে এই ভেবে যে তাদের মধ্যে চারজন জিপিএ-৫ পেয়েছে। আশা করি কৃতিত্ব অর্জনকারী চার শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে আরও ভাল করবে।
জাহিদুল ইসলাম জানান, এ বছর তাদের স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১২৬ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৫ জন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুন মাসে এসএসসি পরীক্ষার জন্য দোয়া চেয়ে বিলবোর্ড টাঙিয়ে আলোচনায় আসেন কাশিনাথপুর বিজ্ঞান স্কুলের পাঁচ শিক্ষার্থী। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টিকে তখন অনেকে ‘সৃজনশীল’ অনেকে ‘অভিনব’ বলেছিলেন।
তবে শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল, ভাইরাল হওয়ার জন্য নয়। ভাগ্যের কথা ভেবেই সবার কাছে দোয়া চেয়েছিলেন তারা। তাদের কোনো পূর্ব পরিকল্পনা ছিল না। একটা প্রেসের সামনে দাঁড়িয়ে পাঁচ বন্ধু কথা বলার সময় সেখানে একটি ডিজিটাল বিলবোর্ড দেখে তারা এই পরিকল্পনা করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে তাদের ভাষ্য ছিল, ‘যেহেতু আমরা রাজনীতি করি না, সেহেতু কি উদ্দেশ্যে বিলবোর্ড বানানো যায় সেই চিন্তা করি। তখন আমাদের মাথায় আসে পরীক্ষার কথা। আমরা ভাবি, সবার কাছে দোয়া চেয়ে আমরা একটা বিলবোর্ড বানাতেই পারি।’
সেই ভাবনা থেকেই ৩টি বিলবোর্ড বানানো হয়। এ জন্য খরচ হয় ১ হাজার টাকা। গত ৫ জুন কাশিনাথপুর মোড়ে ও আশেপাশে তিনটি বিলাবোর্ড টাঙানো হয়। ফেসবুকে কেউ একজন বিলবোর্ডের ছবি শেয়ার করলে বিষয়টি ভাইরাল হয়। পরে অবশ্য অনেক নেতিবাচক মন্তব্য দেখে ৭ জুন বিলবোর্ডগুলো নামিয়ে ফেলে তারা।