ঈশ্বরদী রেলগেটে জনভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। যুগ যুগ ধরে ঈশ্বরদীবাসী যানজটের ভোগান্তি পোহালেও সমস্যার নিরসন হচ্ছে না। প্রতিটি ট্রেন চলাচলের সময় ১০-২০ মিনিট হিসাবে যাত্রীবাহী ট্রেনের জন্য ২০ বার ছাড়াও মালবাহী ও তেলবাহী ট্রেন চলাচলে বন্ধ থাকে রেলগেট। এ সময় উভয় পাড়ে সৃষ্টি হয় যানজট। যানজটের কবলে পড়ে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। এখানে একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের।
ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত পশ্চিমাঞ্চল রেলের বৃহত্তম ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন পূর্বের নিয়মে পরিচালিত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এবং বর্তমান সরকারের রেলপথের উন্নয়নের কারণে ট্রেনের সংখ্যা এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এদিকে রূপপুর প্রকল্পের জন্য পাশেই নির্মাণ হয়েছে নতুন রেললাইন। প্রতিদিন অন্তত ২০টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সময় বন্ধ রাখতে হয় ঈশ্বরদী রেলগেটটি। বৃহত্তম জংশনের রেল ইয়ার্ডে সান্টিং কাজেও কোনো কোনো সময় রেলগেট বন্ধ রাখতে হয়। ঈশ্বরদী শহরের মধ্য দিয়ে রেলপথ ও স্টেশন নির্মাণ হওয়ায় এটি পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে বিভক্ত। ট্রেন চলাচলের জন্য প্রতি বার সিগন্যালে ১০ থেকে ২০ মিনিট হিসাবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা রেলগেট বন্ধ রাখতে হয়। এতে যানজটের কারণে হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তির সঙ্গে সময় নষ্ট হচ্ছে।
ব্রিটিশ আমলের লক সিস্টেমে পরিচালিত হচ্ছে ঈশ্বরদী শহরের রেলগেট। দেশের বহু রেলগেটে এরই মধ্যে ডিজিটাল পদ্ধতির লক সিস্টেম চালু হলেও ঈশ্বরদী রেলগেটে মান্ধাতা আমলের লক সিস্টেমই রয়ে গেছে। যাত্রীবাহী, তেলবাহী কিংবা মালবাহী ট্রেন ঈশ্বরদীর আগে বা পরের স্টেশন থেকে ছাড়ার সময় রেলগেটটি সুইস কেবিনের মাধ্যমে বন্ধ হয়। ট্রেন রেলগেট পার না হওয়া পর্যন্ত খোলা হয় না। রেলগেট বন্ধ থাকায় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী-পরীক্ষার্থী, রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান, রূপপুর প্রকল্প ও ইপিজেডে কর্মরতদের যানবাহন, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের চলাচলসহ জীবনযাত্রা থমকে পড়ে। প্রতিদিনই এখানে ঘণ্টায় ঘণ্টায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দায়িত্বরত ট্রাফিকদের হতে হয় নাকাল।
উপজেলা প্রকৌশলী এনামূল কবীর জানান, ফ্লাইওভার নির্মাণকল্পে এক বছরেরও বেশি সময় আগে ঢাকার টিম জরিপ করেছে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য এখন প্রস্তাবিত ফ্লাইওভার নির্মাণের বিষয়টি পরিকল্পনা কমিশনে রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিএম ইমরুল কায়েস বলেন, ঈশ্বরদীর প্রধান সমস্যা হিসেবে ‘রেলগেট’ চিহ্নিত। সমস্যা সমাধানে ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য জাতীয় সংসদে স্থানীয় এমপি প্রস্তাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করছেন বলে জানি। অনেক আগেই উপজেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্তক্রমে প্রস্তাবও করা হয়েছে।
