নিজের কর্মস্থলে কর্মরত নারীদের সাথে আপত্তিকর সকল অভিযোগ আড়াল করতে অপর এক সহকর্মীর উপর সেই দায় চাপিয়ে নিজেকে নিষ্পাপ প্রমান করে দম্ভের সাথে কর্মস্থলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন নাকানোর স্যাম্পল ইনচার্জ মো. মেহেদী।
সম্প্রতি ঈশ্বরদী ইপিজেডে ঘটে যাওয়া নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনায় মানুষের মনে ধুম্রজালের সৃষ্টি হলে সেই ধুম্রজালে আবদ্ধ অন্ধকারে থাকা ঘটনার পেছনের ঘটনাকে আলোতে আনতে অনুসন্ধানেই বেরিয়ে আসতে থাকে ভদ্রতার মুখোষে আবৃত লেডি কিলার মেহেদির গল্প।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, গত ২৮ আগষ্ট ঈশ্বরদী ইপিজেডের নাকানো কোম্পানির অ্যাকাউন্ট ম্যানেজার আবু সুফিয়ান নামে এক কর্মকর্তাকে একই কোম্পানির এক্সি-কিউটিভ অ্যাডমিন অফিসার লিমাকে জরিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সেই সংবাদ গুলোতে বিয়ের প্রলোভোনে লিমার সঙ্গে আবু সুফিয়ানের প্রেম এবং প্রেম থেকে শারিরিক সম্পর্ক স্থাপনের রসালো সংবাদ প্রচারিত হয়। সে সংবাদ প্রচারের পর কোম্পানির কিছু সুবিধাবাদী কর্মকর্তাকে জরিয়ে কিছু তথ্য সামনে আসতে থাকে।
সেই তথ্যমতে অভিযুক্ত আবু সুফিয়ান, অভিযোগকারী লিমা এবং মো. মেহেদী তারা সবাই ঈশ্বরদী ইপিজেডের নাকানো কোম্পানিতে কর্মরত। একই কোম্পানিতে কর্মরত থাকার সুবাদে তাদের অবাধ মেলামেশার সুযোগ সৃষ্টি হয় কর্মস্থলে এবং বাইরে। মেহেদী এবং সুফিয়ান একে অপরের সাথে দুরত্ব থাকলেও উভয়ের সাথেই নিবির সখ্যতা সৃষ্টি হয় লিমার। সেই সখ্যতা থেকেই লিমা উভয়ের সাথেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। নিজেকে স্বচ্ছল করতে সেই সম্পর্ক রুপ নেয় শারিরিক সম্পর্কে। দুজনকেই সামলে নিয়ে লিমার লাগামহীন জীবনের রং রাঙ্গাতে থাকে রঙ্গিন জীবনের স্বপ্ন।
লিমা সুফিয়ানকে বাইরে সময় দিলেও ঘরের একান্ত সময় দিতেন মেহেদীকে বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রে আরও জানা গেছে, চলতি বছরের ২৭-৩০ জুন লিমা ইপিজিড গেট সংলগ্ন তার এক বান্ধবির ভাড়া বাড়িতে তাদের অনুপস্থিতিতে তার বান্ধবির অনুমতি ক্রমে তার বাসায় একান্ত সময় কাটানোর জন্য আশ্রয় নেন ।সেখানে তার আশ্রয় সঙ্গী হিসেবে মেহেদি ছিলো বলে জানান একাধিক সূত্র। মেহেদী এবং লিমার বিষয়টি জানাজানি হলে সচেতন প্রতিবেশীরা লিমাকে সেই বাসা থেকে বের করে দেন বলেও তারা জানান।
বিষয়গুলো জানাজানি হলে সুফিয়ানের সঙ্গে লিমার সম্পর্কের ভাটা পড়ে দুরত্ব তৈরী হয় মেহেদির সাথেও। এমতাবস্থায় মেহেদির সঙ্গে মিলদিয়ে যে কোন মূল্যে আবু সুফিয়ানকে বিয়ে করার জন্য মনস্থির করে লিমা।
তারই জেরধরে গত ১৬-ই আগষ্ট আবু সুফিয়ানকে মেহেদী স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিয়ের চাপ দিতে তুলে নিয়ে যায় রুপপুর মোড়স্থ হট এ্যান্ড ফ্রেশ রেস্টরেন্টে। সেখানে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সুফিয়ানের মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন এবং লিমাকে ডেকে নেন এবং এখনই লিমাকে বিবাহ করতে হবে বলে মেহেদী তাকে নানা প্রকার ভয়ভীতি দেখানোর এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে হোটেলের ম্যানেজার তাদের হোটেলের বাইরে গিয়ে গন্ডগোল করতে অনুরোধ করেন এবং তাদের হোটেল থেকে বের করে দেন।
হোটেল থেকে বের হয়ে লিমা এবং মেহেদী গং আবু সুফিয়ানকে নিয়ে চন্দ্র প্রভা বিদ্যাপিঠ মাঠে নিয়ে উত্তম মাধ্যম প্রহার করেন। এ সময় সুফিয়ানের কাছে বিবাহ না করার শর্তে একলক্ষ টাকা দাবি করেন মেহেদীগং এবং তারা সুফিয়ানের থেকে তার ডাচ্বাংলা ব্যাংকের ডেবিট কার্ড এবং কার্ডের পিন নম্বর নিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গেলে তার অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকার মোট ত্রিশ হাজার টাকা উত্তোলন করেন তারা।
মেহেদী গং সেখানেই ক্ষান্ত না হয়ে সুফিয়ানকে রুপপুর কাজী অফিসে নিয়ে যান এবং পঞ্চাশ লক্ষ্য টাকা (৫০,০০০০০) দেনমোহর ধার্য করায় ভড়কে যান কাজী। তখন কাজী বিয়ে পড়াতে অপারগতা প্রকাশ করে ছেলে এবং মেয়েকে থানায় নিয়ে বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করে তাদের বিদায় করেন।
কাজীর বাসা থেকে বেরিয়ে মেহেদীগং সুফিয়ানকে তুলে নিয়ে আসেন বাঘইল সাকোড় মুখে। সেখানেই দ্বিতীয় বারের মত সুফিয়ানকে প্রহার করে অজ্ঞান অবস্থায় ফেলে চলে যান। জ্ঞান ফিরে মাসুদ নামের এক অটো চালককে ফোনকরে ডেকে সুফিয়ান ঈশ্বরদী স্কুল পাড়া তার বন্ধুর বাড়ীতে এসে পৌঁছান বলে জানান অটো চালক।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ আগষ্ট রাতে সুফিয়ানকে লিমা তার বাসা থেকে কৌশলে ডেকে নিয়ে বিয়ের জন্য তাকে আটকে রাখেন বলে জানান সুফিয়ান। সে রাতে লিমা সুফিয়ানকে চাপ দিতে থাকেন। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় লিমা তার নিজের হাত চাকুদিয়ে কেটে আত্মহত্যার হুমকি দিতে থাকেন অনবরত। অবস্থা জটিল দেখে আবু সুফিয়ান ৯৯৯ এ ফোন করে নিজের অবস্থার কথা পুলিশ কে জানালে পুলিশ ২৯ আগষ্ট রাত আনুমানিক তিন ঘটিকার দিকে লিমা এবং সুফিয়ানকে উদ্ধার করে ঈশ্বরদী থানায় হস্তান্তর করলে থানা থেকে সুফিয়ানের পরিবার তাকে নিয়ে যশোর চলে যান।