বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি দিতে হবে’ বলে দলীয় নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়েছেন সমাবেশের সভাপতি ও পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির একাংশের আহবায়ক ও জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম সন্টু সরদার।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) ঈশ্বরদীর নতুন হাট গোলচক্কর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি কঠোর আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার মুক্তির দাবি করেন । বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হলে সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি ।
ভাইরাল হওয়া ঐ বক্তব্যে দেখা যায়, বিক্ষোভ মিছিল শেষে কেন্দ্রীয় ও পাবনা জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সামনেই বক্তব্য রাখছেন তিনি। বক্তব্যের মাঝে তিনি কঠোর আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি দিতে হবে’ দাবি করে তাৎক্ষনিক খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি করেন। এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীদের মুখে হাত দিয়ে হাসতে দেখা যায়।
শেখ হাসিনা মুক্তি হলে মনে হয় আপনারা খুশি হন। আপনারা এটা নিয়ে
বেশ উৎসাহি দেখছি। সাংবাদিকদের বলেন, জিয়াউল ইসলাম সন্টু সরদার।
মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং সাবেক ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান হাবিব।
বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে মূহুর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। এতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
এদিকে গুরুত্বপূর্ন পদে থেকে এমন কান্ড জ্ঞানহীন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা। তারা বলেন, সন্টু সরদার একসময় জাতীয় পার্টি করতেন এবং সেসময় চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে স্বার্থ হাসিলের জন্য হাবিবের হাত ধরে বিএনপিতে যোগ দেন। সে এবং তার লিডার হাবিব দুজনই বিএনপির জন্য বাহ্যিক ভালোবাসা দেখালেও মনে অন্য আদর্শ ধারন করেন। অন্য আদর্শের নেতা হয়ে বিএনপির মতো ঐতিহ্যবাহী দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়ে তাদের মাথার ঠিক নেই।
এ বিষয়ে বিএনপির কর্মী আমিরুল ইসলাম বলেন, দলের শীর্ষ নেতাই যদি এমন কথা বলেন, তাহলে আমরা কর্মীরা কিভাবে এমন নেতার নেতৃত্বে রাজনীতি করবো।
এ প্রসঙ্গে জিয়াউল ইসলাম সন্টু সরদার বলেন, কথাটা মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে। আমিও একজন মানুষ, আমারও ভুল হতে পারে। বিষয়টি স্লিপ আব টাং হয়েছে। বক্তব্যের মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইতে গিয়ে কখন যে শেখ হাসিনা বলে ফেলেছি বুঝতেই পারিনি। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনা মুক্তি হলে মনে হয় আপনারা খুশি হন। আপনারা এটা নিয়ে বেশ উৎসাহি দেখছি।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং সাবেক ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেছেন, বর্তমান সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে, বেড়েছে বাস ভাড়াও। দেশে চরম অথনৈতিক সংকট বিরাজ করছে। সরকার দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে। দেশে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। দুর্ভিক্ষ আসার আগেই এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আওয়ামীলীগ সরকারের অধীনে আগামীতে কোনভাবেই নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বিতাড়িত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শুরু হওয়া এই আন্দোলন, শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত চলবে। আমরা চাই, সরকার পতনের আন্দোলন আমার জন্মভূমি ঈশ্বরদী থেকেই শুরু হোক। এবারও ঈশ্বরদী থেকে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হবে।
ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিও :
https://www.facebook.com/amader.ishurdi.3/videos/1284727405265022