ঈশ্বরদীতে হাট ইজারা নিয়ে দুপক্ষের দ্বন্দ্বে জান মালের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চরগড়গড়ি গ্রামে প্রায় দেড় যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত হয় আলহাজ মোড় হাটবাজার। প্রতিদিনের এই সবজি বাজারে ওই এলাকার শত শত কৃষক তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সবজি রপ্তানিতে এই এলাকার বেশ সুনাম রয়েছে।
জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারি নীতিমালা অনুসারে (৩৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা + ভ্যাট) আলহাজ মোড় বাজারের ইজারা পান আব্দুল্লাহ আল কাফী এবং চরগড়গড়ি মাদ্রাসা মোড় (সাপ্তাহিক) হাটের ইজারা পান গোলাম সরোয়ার।
গত দুই মাস হাট ইজারা নিয়ে ছিল না কোনো দ্বন্দ। তবে সম্প্রতি এই দুটি হাটের ইজারা আদায়কে কেন্দ্র করে দুপক্ষের দ্বন্দ্ব পৌঁছেছে চরম পর্যায়ে। এতে যেমন ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসা কার্যক্রম, সেই সাথে এলাকার সুনামও। দুপক্ষের এমন দ্বন্দ্বে জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ শঙ্কিত রয়েছেন স্থানীয় আড়ৎদার, কৃষক এবং দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ব্যবসায়ীরা।
আলহাজ্ব মোড় বাজারের ইজারাদার আব্দুল্লাহ আল কাফী জানান, দীর্ঘদিনের পুরনো এই হাট নিয়ে কোন দ্বন্দ্ব ছিল না। কিন্তু বর্তমানে সরকারী নীতি অনুসারে প্রতিপক্ষরা বাজার ইজারা না পাওয়ায় জোরপূর্বক তা দখলের চেষ্টা করছে। আমরা সরকারি সকল নিয়ম মেনেই এ বাজার কিনেছি এবং আমাদের কাছে সকল কাগজপত্রও রয়েছে। আমরা চাই, কাগজপত্র অনুসারে যে যে হাট বা বাজার পেয়েছেন সে সেখান থেকেই ইজারা আদায় করবেন। তাহলেই সব সমস্যা সমাধান হবে।
তিনি বলেন, শুক্রবার (১ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে হাট বাজারের জায়গা আবারো দুপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে আলহাজ মোড় হাট ইজারাদার গোলাম সরোয়ারের সাথে যোগাযোগের জন্য তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে আলহাজ মোড় হাট ইজারাদারের আরেক অংশীদার আব্দুল হাকিম জানান, আমরা হাট দখল করতে যায়নি, পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসার পর দুপক্ষকে ডেকেছিল। সেখানে দুপক্ষের মধ্যে কিছুটা কথা কাটাকাটি হয়েছে এছাড়া কিছু না।
স্থানীয় কৃষক শরিফুল ও মোজাম্মেল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, উৎপাদিত সবজি বিক্রির জন্য আলহাজ মোড় বাজারের নিতে দিচ্ছেন না সরোয়ার হোসেনের লোকজন। এ বাজারে সবজি বিক্রি করতে না পেরে বাধ্য হয়ে অন্য বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে সবজি নষ্ট হচ্ছে, দামও কম পাচ্ছি।
ব্যবসায়ী মিলন মৃধা বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত আছি, এমন পরিবেশে ব্যবসা করা সম্ভব হচ্ছে না। বাজারের আড়ৎদার মজিবর হোসেন বলেন, এমন দ্বন্দ্বে ব্যাবসার পরিবেশ নষ্ট হয়েছে, আমদানি কম হওয়ায় বেশি দামে মাল কিনতে হচ্ছে। এতে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, গত শুক্রবার বাজারের সীমানা চিহ্নিত করে পুনরায় বুঝে দেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার সকালে ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।