রেলমন্ত্রীর ‘আত্মীয়’ পরিচয়ে বিনা টিকিটধারী তিন যাত্রীকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায়, বরখাস্ত টিটিই
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সেই ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে। শনিবার (৭ মে) সকাল ১১টার দিকে শফিকুল ইসলাম নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) মধ্যরাতে ঈশ্বরদীতে রেলমন্ত্রীর ‘আত্মীয়’ পরিচয়ে বিনা টিকিটধারী তিন যাত্রীকে জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করেন টিটিই শফিকুল ইসলাম। পরে তিনি রেলমন্ত্রীর ওই তিন আত্মীয়ের সাথে ‘অসদাচরণ’ করেছেন- এমন অভিযোগে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। শফিকুল ইসলাম ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন টিটিই হেডকোয়ার্টারে কর্মরত।
টিটিই শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরদী রেলওয়ের টিটিই হেডকোয়ার্টারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র টিটিই ইন্সপেক্টর বরকত উল্লাহ আল-আমিন বরখাস্তের দিন ফোন করে তাকে জানিয়েছেন, রোববার (৮ মে) পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে কার্যালয়ের ম্যানেজার (ডিআরএম) আমাকে তলব করেছেন। সৃষ্ট ঘটনা নিয়ে হয়তো আমার সাথে কথা বলবেন।
বরখাস্তের আদেশ সমীচীন হয়েছে কিনা এবং তিনি বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করবেন কিনা- জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, স্যাররা যেটা ভাল মনে করেছেন, সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখানে আমার আর কী বলার আছে। রোববার বিভাগীয় কার্যালয়ে গিয়ে দেখি, স্যাররা কী বলেন। তারপর আমার স্যারের (ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র টিটিই ইন্সপেক্টর) সাথে আলোচনা করে প্রত্যাহারের আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।
শফিকুল ইসলাম বলেন, ওইদিন আমি ওই তিন যাত্রীর সাথে কোনো ধরনের ‘অসদাচরণ’ করিনি। তারাও আমার সাথে খারাপ কোনো আচরণ করেননি। কোনো ধরনের কথা কাটাকাটিও হয়নি। এমনকি হলো যে আমি নিজেও জানি না। আল্লাহ জানেন আর তারা জানেন। শুধু জানি, আমি আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছি। কোনো অন্যায় বা অনিয়ম করিনি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে তিন জন যাত্রী বিনা টিকিটে এসি কেবিনে চেপে ঢাকা যাচ্ছিলেন। এসময় কর্তব্যরত টিটিই শফিকুল ইসলাম তাদের কাছে টিকিট দেখতে চাইলে তারা রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। টিটিই বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পাকশী বিভাগীয় রেলের সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (এসিও) নুরুল আলমের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি সর্বনিম্ন ভাড়া নিয়ে এসি টিকিট না করিয়ে, সাধারণ কোচের টিকিট কাটার পরামর্শ দেন। এসিও’র পরামর্শ অনুযায়ী টিটিই শফিকুল ইসলাম ওই তিন ট্রেনযাত্রীকে এসি টিকিটের পরিবর্তে ৩৫০ টাকা জনপ্রতি হিসেবে ১ হাজার ৫০ টাকা নিয়ে তিনটি সুলভ শ্রেণির নন এসি কোচে সাধারণ আসনের টিকিট বানিয়ে দেন।
আরও পড়ুন :