ঈদ উদযাপন করতে এক শ্রেণির কিশোরেরা ট্রাক এবং পিকআপ ভ্যানে করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন সড়ক থেকে শুরু করে পাকশী জোড়া সেতু পর্যন্ত।
মঙ্গলবার (৩ মে) ঈদুল ফিতরের দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অসংখ্য ট্রাক আর পিকআপ ভ্যানে গাদাগাদি করে কিশোরদের ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন ঈশ্বরদী বিভিন্ন সড়ক থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ৫/৬ পিকআপ আটক করেছে পুলিশ
উচ্চস্বরে গান-বাজনা বাজানোর তালে উদ্দাম নৃত্য, লাফঝাঁপ আর চিৎকার-চেঁচামেচি চলতে থাকে চলন্ত গাড়িতে। কিশোর ও সদ্য কৈশোর পেরোনো এ তরুণদের এমন ঈদ বিনোদনকে ‘অসুস্থ বিনোদন’ বলে উল্লেখ করছে সচেতন মহল।
ঈদ বিনোদনের নামে চলন্ত খোলা ট্রাক এবং পিকআপ ভ্যানে নাচানাচির ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা-মহাসড়কে চলাচলকারী পরিবহন চালকেরা এমনটাই জানান। তারা এভাবে ঘুরে বেড়ানো বন্ধের দাবি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরেই দেখা গেছে বৈশাখ ও ঈদের দিন গুলোতে দুই/তিন দিন পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন সড়ক থেকে শুরু করে পাকশী জোড়া সেতু এলাকা পর্যন্ত ট্রাক, পিকআপ ভ্যানে করে এক শ্রেণির কিশোর, তরুণেরা উল্লাস করে বেড়ায়। ট্রাকে জেনারেটর নিয়ে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে নাচানাচি করে।
চলন্ত গাড়িতে লাফালাফি করে তারা, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ঈদের পরদিন বুধবার (৪ মে) সকাল থেকেও এভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে তরুণদের।
সাড়া গোপালপুর এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঈদের দিন নামাজের পর থেকে রাত পর্যন্ত উচ্চস্বরে গান-বাজনা বাজিয়ে ট্রাক নিয়ে সড়কে দাপিয়ে বেড়ায় কিশোররা।
রাস্তাঘাটে মেয়েদের দেখলে বাজে মন্তব্য ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে। অসভ্যতা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
অটোরিকশা চালক কবির মাহামুদ বলেন, কিশোরদের ঈদ বিনোদনের নামে এভাবে ট্রাক নিয়ে গানবাজনা বাজিয়ে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়ানো দিন দিন বাড়ছে। যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এতে করে যে কোনো সময় দুর্ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটতে পারে। তাছাড়া ট্রাকে নাচানাচির সঙ্গে মাদক সেবন করতেও দেখা গেছে অনেককে। এভাবে ঘুরে বেড়ানো বন্ধ করা জরুরি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠক ও সাংবাদিক মাসুম পারভেজ কল্লোল বলেন, শুধু মহাসড়কই নয়, গ্রামের সড়ক দিয়েও এ ‘ডিজে পার্টি’র দলের ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ঘুরে বেড়াচ্ছে। এভাবে ঈদ বিনোদন এক ধরনের অসুস্থতা। এভাবে গাড়িতে করে হইহুল্লোড় করছে, ধুমপান করছে। অশ্লীল ভঙ্গিমা করে চেঁচামেচি করছে, যা নৈতিক অবক্ষয় ঘটাচ্ছে। এগুলো বন্ধে সামাজিকভাবেও এগিয়ে আসা উচিত। আর মহাসড়কে অবাধে ঘুরে বেড়ানো বন্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ কাম্য। যে কোনো সময় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।
ঈশ্বরদী হাইওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদী উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলোতে চেকপোস্ট রয়েছে। ঈদের দিন যেসব ট্রাকে করে এভাবে ছেলেরা এসেছে, তাদের সাময়িক সময় আটকে রেখে মহাসড়ক ত্যাগ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। মহাসড়কে ট্রাক বা পিকআপ ভ্যানে লোকজন বহন করাই নিষিদ্ধ। ঈদের সময় অনেককে বিনোদনের নামে ট্রাক/পিকআপ ভ্যান নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। আমরা যেখানেই তাদের পেয়েছি, সেখান থেকেই ফিরিয়ে দিয়েছি। মহাসড়কে আমাদের টহল অব্যাহত রয়েছে।