শনিবার , ১২ মার্চ ২০২২ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

ঈশ্বরদী-শত বাধা পেরিয়ে রেলওয়ের প্রকৌশলী রুম্পা

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
মার্চ ১২, ২০২২ ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ
ঈশ্বরদী-শত বাধা পেরিয়ে রেলওয়ের প্রকৌশলী রুম্পা

ছোটবেলাতে ঈদের সময় রাজশাহী থেকে পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে দাদা বাড়ি উল্লাপাড়া যেতাম। তখন রাজশাহী থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু স্টেশন পর্যন্ত একটি আন্তঃনগর ট্রেন ‘পদ্মা এক্সপ্রেস’ চলাচল করত।

তখন থেকেই আমাকে নিয়ে আমার আব্বুর একটা প্রবল ইচ্ছে ছিল, আমি বড় হয়ে একদিন রেলওয়ে প্রকৌশলী হবো। আম্মুর আন্তরিকতা আর সহযোগীতায় ২০১৩ সালে ৩২ তম বিসিএস চান্স পেয়েছিলাম।

তখন রেলওয়ে সার্কুলার হয়েছিল, আমার আব্বু তার ইচ্ছের কথা আমাকে জানান, আমি যেনো রেলওয়ে প্রকৌশলী হই। আব্বুর উৎসাহে আমি বিসিএসে সেদিন প্রথম চয়েজ দিয়েছিলাম রেলওয়ে প্রকৌশলী।

আজ আমার আব্বু-আম্মুর স্বপ্ন সার্থক হয়েছে। ব্রিটিশ আমলের তৈরি শতবর্ষ অতিক্রম করা পুরোনো জংশন স্টেশনে দায়িত্ব পালনকালে কথাগুলো বলছিলেন, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সব বিভাগীয় দফতরের মধ্যে একমাত্র নারী কর্মকর্তা রিফাত শাকিল রুম্পা।

লক্ষ্যটাকে চ্যালেঞ্জের মত গ্রহণ করে বেশ বাঁধা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী হয়েছেন রুম্পা।

রুম্পার বাবা মো. আব্দুল হাই রাজশাহীতে বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। দাদার বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া। বগুড়াতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করলেও শৈশব-কৈশোর কেটেছে রাজশাহী শহরে বাউন্ডারিতে ঘেরা এক বাড়িতে। তবে ছোটবেলা থেকেই বেশ চঞ্চলা ও দুরন্ত প্রকৃতির ছিল। আরও দুই-চারটি মেয়েদের মত শৈশব-কৈশোরের দুরন্তপনায় ছুঁটে বেড়ানোর সুযোগ সে কখনো পাননি। অনেকটা মায়ের রক্তচক্ষুর কড়া শাসনের কারণে চার দেওয়ালে বন্দি জীবনের মধ্যে বড় হতে হয়েছে। পড়ার সময়ে পড়া, খাওয়ার সময় খাওয়া, আর ঘুমানোর সময় ঘুম ছাড়া শৈশব-কৈশোর বয়সে, খেলাধুলা কিংবা যে কোন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ ছিল না। একেবারে পরিবারে ধরাবাঁধা রুটিন মাফিক জীবন বললে ভুল হবে না।

রুম্পা রাজশাহীর সরকারী পিএম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাইমারি ও মাধ্যমিক শিক্ষা জীবন শেষ করেন। ২০০৪ সালে সায়েন্স থেকে মাধ্যমিক (এসএসসি) পাশ করার পর ২০০৬ সালে রাজশাহী গভ: নিউ ডিগ্রী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে রাজশাহী প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রিক বিভাগে বিএসসি শেষ করেন।

রিফাত শাকিল বাবা-মায়ের একমাত্রই সন্তান ছিলেন। ছোটবেলা থেকে কড়া শাসনে মানুষ করেছেন যে কারণে একমাত্র সন্তান- এমনভাবে মানুষ হয়ে নিজেকে তৈরি করবে যেন বড় হয়ে নিজের পরিচয়ে সাফল্যের স্বর্ণশিখরে সহজেই পৌঁছাতে পারে।

২০১২ সালে পড়াশুনা শেষে রাজশাহীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসাবেই তিনি যোগদান করেন রুম্পা। বেশিদিন টেকেনি সেখানে মন। তার ঝোঁক ছিল, সে মাঠ পর্যায়ে দৌড়াদৌড়ি করে কিছু করবে। আটমাস পরে সে ওই চাকরি ছেড়ে দিয়ে রাজশাহীর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে সহকারী ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেখানেও আটমাস মন বসেছিল।

মায়ের শাসনের মধ্যে ভালবাসা ও উৎসাহে অংশগ্রহণ করে ৩২ তম বিসিএসে। সে সময় রেলওয়েতে সার্কুলার হলে ২০১৩ সালে ৩২ তম বিসিএসে চান্স মেলে রিফাত শাকিলের। বিসিএসের প্রথম সার্কুলার হওয়ার পর বাবার স্বপ্নের কথা জানতে পারেন তিনি। প্রথম পছন্দ ছিল রেলওয়ে। ২০১৪ সালের আগস্টে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের দফতরে সহকারী বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী হিসাবে যোগদান করেন।।

২০১৬ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন রিফাত শাকিল। শ্বশুরবাড়ি কুড়িগ্রাম, তার স্বামী কৃষি কর্মকর্তা। পারিবারিক সহমর্মিতা পেয়ে ২০১৭ সালের মার্চে পদোন্নতি পেয়ে রিফাত শাকিল রুম্পা, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের বৈদ্যুতিক কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজ পরিবারের অনুপ্রেরণায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

চ্যালেঞ্জিং পেশায় কেন আসলেন এমন প্রশ্নের জবাবে রিফাত শাকিল রুম্পা বলেন, আমার আম্মু ছিল গৃহিণী। আমিই একমাত্র সন্তান বলে ছোটবেলার থেকে মা-বাবার ইচ্ছে ছিল,এমনভাবে আমি গড়ে উঠবো বড় হয়ে নিজের যেন পরিচয় থাকে। আর ছোটবেলা থেকে কঠোর শাসনে বড় হয়েছি। আমার ইচ্ছে থাকলেও পড়াশুনা ছাড়া নাচ, গান, আবৃত্তি কোন কিছুতেই অংশগ্রহণ করতে দেয়নি।

তিনি জানান, আমার ছোটবেলা থেকে ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হওয়ার। নবম শ্রেণিতে উঠার পর জীববিদ্যা বিষয়ে ভয় পেতাম। পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন, গণিতে বেশ ভালো ছিলাম।

রিফাত শাকিল জানান, মা-বাবা সার্বক্ষণিক বলতো ‘তুমি পড়াশুনা করো, নিজের একটি পরিচয় তৈরি করো। তারপর সবকিছু। ’ এমনকি আমার বিয়ের ব্যাপারে তারা সবসময় বলতো- ‘আমার মেয়ের একটা পরিচয় হবে। তারপর বিয়ে!’ কারণ বিয়ে হয়ে গেলে চাকরির ক্ষেত্রে ভাটা পড়ে যায়।

শৈশব-কৈশোরের দুরন্তপনা কেমন কাটিয়েছেন, জানতে চাইলে রিফাত শাকিল অনেক আক্ষেপ করে জানান, ‘একদমই বন্দি জীবন। সকালে উঠে স্কুল। পিএন স্কুলে পড়তাম। স্কুলের ঘণ্টা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তালা! যত যায় হোক না কেন? বের হওয়ার সুযোগ ছিল না। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে খাওয়া-দাওয়া শেষে একটু বিশ্রাম, ঘুম থেকে উঠে বাউন্ডারি ওয়ালের মাঝে বাসার সামনে একটু খেলাধুলা, মাগরিবের আযান হলে বাসার ভেতরে প্রবেশ, পড়াশুনা, খাওয়া শেষে ঘুম, একদম বন্দি জীবন।

রুম্পা বলেন, আমি যেভাবে বড় হয়েছি, আমার ছেলে আইয়াজ আফিফ রাইয়্যানকে সেভাবে বড় করছি না। একদমই খোলা জায়গা-খোলা মাঠ, যত দুষ্টুমি আছে সে করছে। শৈশবের যে কতটা আনন্দ সে উপভোগ করছে, আমি সেটা পাইনি।

চাকরি জীবনে সম্পর্কে রিফাত শাকিল রুম্পা বলেন, আমি অনেক কিছু করতে চাইলেও করতে পারি না। পদ্ধতিগত কিছুটা জটিলতার কারণে অনেক কিছু সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে আমি চাই, অনেক কিছু করতে। আমি যদি পজিটিভ চিন্তা করি, তাহলে ব্যর্থতার গ্লানি থাকবে না। আর অনেক পুরুষের মধ্যে থেকে ছোট ছোট প্রতিকূলতা তো থাকবে। বিষয়গুলো এড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

বর্তমান তরুণ প্রজন্মের মেয়েদের উদ্দেশ্যে রুম্পা বলেন, আগে লক্ষ্য স্থির করতে হবে। লক্ষ্য স্থির না থাকলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব না। লক্ষ্য পূরণের জন্য চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। লক্ষ্যটা চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিতে হবে। আমি এটা পূরণ করবই, তাহলে সে বড় হবে।

তিনি আরও বলেন, অনেকে নারী এখন চ্যালেঞ্জিং পেশায় দায়িত্ব পালন করছেন। নারী এখন দয়ার কোন পাত্র না। তাদের ওপর নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যৎ। তীব্র প্রতিযোগিতা আর চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন, পাশাপাশি ঘর-সংসারে মনোযোগ দিচ্ছেন। শ্রম, মেধা দক্ষতা দিয়ে পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলে নারীরা এখন কৃষি, চিকিৎসা, সাংবাদিকতাসহ চ্যালেঞ্জিং কাজে বেশ সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

আপনার জন্য নির্বাচিত
ছাত্রলীগ থেকে রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

ছাত্রলীগ থেকে রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু

ডিসি অফিস ঘেরাও : পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার ও অপসারণের দাবি

রাশিয়ায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি উৎপাদন চুক্তি সই

ঈশ্বরদীতে রেলওয়ের গাছ কেটে গোপনে বিক্রি, জানেন না কর্মকর্তারা

ঘোষণার ছয় বছর পরও ঈশ্বরদীতে স্মার্টকার্ড পাননি প্রায় ৩ লাখ নাগরিক

ঘোষণার ছয় বছর পরও ঈশ্বরদীতে স্মার্টকার্ড পাননি প্রায় ৩ লাখ নাগরিক

উৎসব হোক সবার

উৎসব হোক সবার

ঈশ্বরদীতে পদ্মানদী থেকে হাত পা বাঁধা দুর্গন্ধযুক্ত অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার

ঈশ্বরদীর ২৯টি মন্দিরে চলছে দূর্গোৎসব

ঈশ্বরদীর ২৯টি মন্দিরে চলছে দূর্গোৎসব

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
পাবনার ৫ আসন : ৩৭টি মনোনয়নপত্রের মধ্যে বাতিল তিন

সড়ক দুর্ঘটনায় রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ শ্রমিক নিহত

error: Content is protected !!