ঈশ্বরদী ইপিজেডের তিয়ানে আউটডোর (বিডি) কো. লিমিটডে নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নামে চীন থেকে আসা চালানে বিভিন্ন ব্রান্ডের ১ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার শলাকা সিগারেট পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে ১ কোটি ২৯ লাখ ৪০ হাজার শলাকাই ওরিস সিলভার ব্রান্ডের।
রয়েছে ১৮ লাখ ৮০ হাজার ওরিস গোল্ড, ১০ লাখ ইজি গোল্ড, ২ লাখ ৫০ হাজার ডানহিল, ২ লাখ ৪০ হাজার ডানহিল সুইস, ১ লাখ ওরিস ডাবল আপেল, ১ লাখ ওরিস স্ট্রবেরি ১ লাখ, ২ লাখ ৬০ হাজার বেনসন ও ৬০ হাজার শলাকা মন্ড ব্রান্ডের সিগারেট। ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকার এসব সিগারেট পাচারের মাধ্যমে প্রায় ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা হয়েছিল।
শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধায় চালানটি বন্দরে আসে।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার খুলে এসব সিগারেট পান কাস্টমস কর্মকর্তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. সালাউদ্দিন রিজভী।
তিনি জানান, চীন থেকে ‘কটন ইয়ার্ন’ ঘোষণায় ৪০ ফুট লম্বা একটি কনটেইনারে চালানটি বন্দরে আসে।
চালানটি আমদানির লক্ষ্যে বেপজার থেকে আইপি ইস্যু করা হয়। এটি খালাসের জন্য চট্টগ্রামর স্ট্র্যান্ড রোডের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ক্রোনি শিপিং করপোরেশন (প্রা.) লিমিটেড জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিল অব এন্ট্রি (সি-৫৬৪৪৯) দাখিল করে। এরপর চালানটি শুল্কায়নের জন্য গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইপিজেড কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে দলিলাদি দাখিল করা হলে আইপির সঠিকতার বিষয়ে সন্দেহ হলে বিষয়টি বেপজার সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচাই করা হয়। যাচাইকালে গড়মিল দেখা দিলে বিষয়টি কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিমকে জানানো হয়। এআইআর এ চালানে অসত্য ঘোষণার বিষয়ে প্রাথমিক ধারণা পায়। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি চালানটি খালাস কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
কায়িক পরীক্ষার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়ে রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) কনটেইনারটি বন্দরে ফোর্স কিপডাউন করতে বন্দরকে চিঠি দেওয়া হয়। কাস্টম হাউস চট্টগ্রামের পরিকল্পনা অনুযায়ী সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর, সরকারি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কনটেইনারটি খুলে শতভাগ পরীক্ষা করা হয়। কনটেইনারে থাকা ৮৭৭টি কার্টন পরীক্ষায় সিগারেটগুলো পাওয়া যায়।
কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার ডেপুটি কমিশনার মো. শরফুদ্দিন মিঞা জানান, এ চালানে পাওয়া সিগারেটের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। যার মাধ্যমে প্রায় ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা হয়েছিল। সিগারেট শর্তসাপেক্ষ আমদানিযোগ্য এবং এটি উচ্চ শুল্কের পণ্য।
তিনি জানান, এ ঘটনায় দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন কাস্টম হাউসের কমিশনার। দোষীদের বিরুদ্ধে কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এবং প্রচলিত অন্যান্য আইন ও বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন :