ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি লেইভার ক্রেন থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্যাব্ল চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার রাতে বিশেষ অভিযানে কুষ্টিয়া থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ঈশ্বরদী থানায় সোপর্দ করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সাইফুল ইসলাম সাজীব (৩৫) ও তাঁর ছোট ভাই তারিকুল ইসলাম তারেক (৩৩)। এরা পেশায় ভাঙারি ব্যবসায়ী। ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাদিউল ইসলাম শুক্রবার দুপুরে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব-১২ সিপিসি-১-এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার ইলিয়াস খান জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের অভ্যন্তরে ক্যাব্ল চুরির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিগত কয়েক দিন ধরেই বিভিন্ন ধরনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। এসব তথ্যের ভিত্তিতে তাঁরা জানতে পারেন, কুষ্টিয়ার দুই ভাঙারি ব্যবসায়ী রূপপুরের ক্যাব্ল চুরির সঙ্গে জড়িত।
তিনি আরও বলেন, ‘চুরির পর ক্যাব্লগুলো তাঁদের কাছে রাখা ছিল। পরে তাঁরা মেশিন দিয়ে কেটে অন্যত্র বিক্রি করে দেন। এসব নানা তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আমরা দুজনকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার রাতেই ঈশ্বরদী থানায় হস্তান্তর করেছি।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আতিকুল ইসলাম আতিক বলেন, ‘রূপপুরের দুটি লেইভার ক্রেন থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যুতিক ক্যাব্ল চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে পাঠানো হবে।’
উল্লেখ্য, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি লেইভার ক্রেন থেকে সম্প্রতি ২৯৫ মিটার বৈদ্যুতিক ক্যাব্ল চুরির ঘটনা ঘটে। ক্রেনগুলো পাকশীর রূপপুরে পদ্মা নদীতে আসা মালবাহী জাহাজ থেকে মালামাল ওঠানো-নামানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
প্রকল্পের কাজের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ওই ক্রেন দুটি থেকে চুরি যাওয়া ক্যাব্লের মূল্য ৬৫ লাখ টাকা। চুরির পর গত ১৯ জানুয়ারি রাতে ঈশ্বরদী থানায় রূপপুর প্রকল্প থেকে এসংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা হয়। প্রকল্পের ডাইরেক্টর অব সিকিউরিটি ভিএন তুরুটিন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। রূপপুর প্রকল্পের অভ্যন্তরে দুটি লেইভার ক্রেনে গত ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণের সময় ক্যাব্লগুলো রাখা ছিল। কিন্তু গত ৯ জানুয়ারি ওই দুটি লেইভার ক্রেনের যান্ত্রিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় ২৯৫ মিটার ক্যাব্ল চুরি যাওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে।