রবিবার , ২ জানুয়ারি ২০২২ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

ঈশ্বরদীতে দশ মাসে আট হত্যাকাণ্ড

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
জানুয়ারি ২, ২০২২ ১০:৪৭ পূর্বাহ্ণ
ঈশ্বরদীতে দশ মাসে আট হত্যাকাণ্ড

ঈশ্বরদীতে হঠাৎ করেই বেড়েছে হত্যাকাণ্ড। গত বছরের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃদ্ধা, গৃহবধূ, ছাত্র, যুবক থেকে শুরু করে তালিকায় রয়েছে ভিক্ষুকও। আসামি গ্রেপ্তার রয়েছে, তদন্তে অগ্রগতিও রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত বছরের ৩১ মার্চের ঘটনা। আনোয়ারা খাতুন নামে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ একজনকে আটক করে। এ ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিআইবি) তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।

বৃদ্ধা হত্যাকাণ্ডের ঠিক এক মাস পর (৩০ এপ্রিল) মশুরিয়াপাড়ায় বাড়িতে এসে পরিকল্পিতভাবে মুক্তি খাতুন রিতা (২৭) নামে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনের মধ্যে তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। একজন পলাতক রয়েছে।

জানা গেছে, টাকা দিয়ে চাকরি না পাওয়ায় এই হত্যাকাণ্ড বলে গ্রেপ্তার তিনজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রেম আর জমির ভাগাভাগি নিয়ে দ্ব›েদ্বর কারণে শাকিল আহমেদ নামে ব্যবসায়ীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সামনে এক ভাড়া বাসা থেকে ২৮ মে রাতে শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। ‘শাকিল ক্লথ স্টোর’ নামে ঈশ্বরদী বাজারে তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। এ ঘটনায় শাকিলের স্ত্রী মিম খাতুন ও আপন ছোট ভাই সাব্বির আহমেদকে পুলিশ আটক করে। পরে হত্যারকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতে জবানবন্দিতে স্বীকার করে তারা। ৩০ মে শাকিলের মামা কোরবানী আলী বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের কারণ উদ্ঘাটন করে। গ্রেপ্তারকৃতরা কারাগারে রয়েছে এবং এ মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। শাকিল আহমেদ হত্যাকাণ্ডের পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় ভিক্ষুক মিলন হোসেন চাপাকে। এই হত্যাকাণ্ডেরও রহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ। পাওনা টাকা দিতে কালক্ষেপণ এবং বাকবিতণ্ডার পর এই হত্যাকাণ্ড বলে তদন্তের পর জানতে পারে পুলিশ

২৪ জুন পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিক্ষুক মিলন হোসেনকে গলা টিপে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্লেড দিয়ে কেটে ক্ষত-বিক্ষত করে এবং বিদ্যুৎস্পর্শ করে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর জড়িত চারজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তারা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

এরপর ১১ আগস্ট পৌর এলাকার সাঁড়া গোপালপুর এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে ১৮ বছর বয়সি মেঘলা খাতুন নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। ঘটনার পরপরই গৃহবধূর বাবা হাফিজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে মেঘলাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। সে আত্মহত্যা করতে পারে না। মামলায় শ্বাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি কারাগারে রয়েছেন। গৃহবধূ মেঘলার স্বামী পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানায়। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলেও পুলিশ জানিয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। দুজনকে এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়। বাকিরা পলাতক রয়েছে। তদন্ত চলছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা।
১০ ডিসেম্বর অপহরণের চার দিন পর কলেজছাত্র রাইমুল ইসলাম হৃদয়ের (২২) ১০ টুকরো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৩ ডিসেম্বর রাত ৯টার দিকে উপজেলার দাশুড়িয়ার নওদাপাড়া গ্রামে চাঁদ আলী নামের ব্যক্তির বাড়ির ঘরের মেঝে খুঁড়ে হৃদয়ের লাশের টুকরো টুকরো অংশ উদ্ধার করা হয়। বাড়িতে থাকা হোসেন আলীকে আটক করে পুলিশ। সে পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্স প্রথমবর্ষের ছাত্র ছিল। পাওনা টাকা না পাওয়ায় হৃদয়কে হত্যা করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে হোসেন আলী। সে পাবনা কারাগারে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সর্বশেষ ২১ ডিসেম্বর সকালে দাশুড়িয়ায় এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২১ ডিসেম্বর সকালে শারমীন শিলা (৩২) নামে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করে সুমন আলী নামে এক যুবক। এ ঘটনায় আহত হন গৃহবধূর স্বামী রানাউর রহমান। ঘটনার পরপর হামলাকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মুনশিদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আটক সুমন আলী (৩০) একই উপজেলার সরাইকান্দি গ্রামের আজগর আলীর ছেলে। পুলিশ জানায়, আটক সুমন আলী এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
সদ্য বিদায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) ফিরোজ কবীর আট হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বলেন, এসব হত্যাকাণ্ডে আইনশৃঙ্খলার অবনতি এটা কোনোভাবেই বলা যাবে না। তিনি বলেন, চারা বটতলার বৃদ্ধা আনোয়ারা খাতুন ছাড়া সব হত্যাকাণ্ডই মূলত ব্যক্তিগত সম্পর্ককেন্দ্রিক। পরকীয়া, জমি ভাগাভাগি, টাকা লেনদেন থেকে সম্পর্কের অবনতি হওয়ায় হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে।

এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আগাম তথ্য পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে ঘটনার পরপরই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। কারণ উদ্ঘাটনসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করেছে। অধিকাংশ মামলার প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ঈশ্বরদীর সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

আপনার জন্য নির্বাচিত

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ