বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বিগুণ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ নিতে ফরাসি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার ফ্রান্সের এমইডিইএফ ইন্টারন্যাশনালের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান। খবর বাসসের
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে ফরাসি বিনিয়োগ এখনও তার বৈশ্বিক বিনিয়োগের তুলনায় কম। আমি ফরাসি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগগুলো সরাসরি প্রত্যক্ষ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
প্রধান অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক সংযোগ কেন্দ্রে পরিণত করার জন্য কাজ করছি। সড়ক, রেল, সমুদ্র, জ্বালানি ও ডিজিটাল সংযোগ ক্ষেত্রে অঞ্চল জুড়ে আমাদের বিনিয়োগ হবে প্রকৃত পট-পরিবর্তক।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সরাসরি তার অফিসের সঙ্গে সংযোগ রেখে কাজ করছে এবং সম্ভাব্য যে কোনো উপায়ে তার কার্যালয় ফরাসি বিনিয়োগকারীদের সহায়তা করতে পারলে খুশি হবে।
শেখ হাসিনা পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আপনার প্রবেশ সহজ করার জন্য আপনি একজন স্থানীয় অংশীদার খুঁজতে পারেন এবং দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের সাথে একটি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা হবে আপনার জন্য উত্তম।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে দ্বিপক্ষীয়ক বাণিজ্য ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি।’
ফ্রান্স এখন বাংলাদেশের পঞ্চম বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য- একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ করার লক্ষ্য রাখতে হবে। ফ্রান্সে আমাদের রপ্তানি আরও বৈচিত্র্যময় হওয়া চাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি নিশ্চিত যে ফরাসি বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগে উচ্চ মুনাফার সম্ভাবনা সম্পর্কে আস্থাবান হবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় আপনাদের সার্বক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ও পরামর্শকে স্বাগত জানাব। বাংলাদেশ পারস্পরিক সুবিধার জন্য আপনাদের ব্যবসায়িক উদ্যোগের বিকাশে আপনাকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।’
এ সময় তিনি বাংলাদেশ-ফ্রান্স বিজনেস কাউন্সিল গঠনের জন্য এমইডিইএফ’কে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রাতিষ্ঠানিক সংযোগের মাধ্যমে আরও দ্বিপক্ষীয় সম্পৃক্ততাকে উৎসাহিত করবো। আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের পরের বছর বাংলাদেশে এমইডিইএফ ব্যবসায়িক মিশন পরিকল্পনা করা যেতে পারে।’
প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ এবং ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার গতকালের আলোচনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সম্মত হয়েছেন।
তিনি যোগ করেন, ‘এটি আমাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বেও প্রতিফলিত হতে হবে। আমি এর জন্য আপনাদের সক্রিয় সহযোগিতার প্রত্যাশা করছি।