সড়কপথে যানজটের বিড়ম্বনা এড়াতে আকাশপথে যাতায়াতের প্রবণতা বাড়ছে প্রতিদিন। যাত্রী বাড়ায় সম্ভাবনা বাড়ছে অ্যাভিয়েশন খাতেও। এমন প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন বন্ধ পড়ে থাকা দেশের ছয়টি বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নেওয়া জরুরী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্রিটিশ আমলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পাবনার ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, মৌলভীবাজারের শমশেরনগর, কুমিল্লা, বগুড়া ও লালমনিরহাটে ছয়টি বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে কয়েকটি বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু হলেও যাত্রীসংকটে বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু এখনকার বাস্তবতা ভিন্ন দাবি করে অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, ‘সড়কপথে যানজটের কারণে দেশে বিমানে মানুষের যাতায়াত অনেকে বেড়েছে। সরকারের উচিত অব্যবহৃত বিমানবন্দরগুলো চালুর জন্য বিশেষ প্রকল্প নেওয়া। এতে দেশের অ্যাভিয়েশন খাত সমৃদ্ধ হবে, মানুষের জীবনযাত্রা অনেক সহজ হবে।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ‘শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাজ চলছে। কক্সবাজার, সৈয়দপুর ও যশোর বিমানবন্দরে উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। এগুলোর কাজ শেষে অব্যবহৃত বিমানবন্দর চালুর প্রকল্প হাতে নেব।
বন্ধ বিমানবন্দরগুলো :
ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করেছে বিমান বাংলাদেশ। ২০১৩ সালে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ এখান থেকে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালু করলেও পরের বছরই তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর ঘিরে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন পাবনা-৪ (আটঘরিয়া-ঈশ্বরদী) আসনের সাবেক সাংসদ মনজুর রহমান বিশ্বাস।
১৯৯৫ সালে অ্যারো বেঙ্গল এয়ার সার্ভিস শমসেরনগর বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট চালু করলেও যাত্রীর অভাবে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি এম এ আহাদ বলেন, ‘হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের মানুষ বিমানে যাতায়াত করতে সিলেট বিমানবন্দর ব্যবহার করতে হয়। সময় বেশি লাগে। সমশেরনগর বিমানবন্দর চালু হলে এই অঞ্চলের মানুষ অনেক উপকৃত হতো।
নেউরা-ঢুলিপাড়ার পাশে স্থাপিত কুমিল্লা বিমানবন্দর ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটে সচল ছিল। ১৯৯৪ সালে পুনরায় বিমানের ফ্লাইট চালু হলেও যাত্রীসংকটে দুই সপ্তাহের মধ্যেই সেটি বন্ধ হয়ে যায়। কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদ পারভেজ খান ইমরান বলেন, ‘কুমিল্লা এখন দেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক জোন। বিমানবন্দর-সংলগ্ন ইপিজেড রয়েছে, কিন্তু যোগাযোগ সমস্যার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা খুব বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দরটি ১৯৮০ সাল থেকে পরিত্যক্ত। আশির দশকের পরে লালমনিরহাট বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট চলাচল করেনি। বগুড়া বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়নি।