রবিবার , ৩ এপ্রিল ২০২২ | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

পাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সবাইকে ম্যানেজ করেই বাড়ানো হয় ওষুধের মূল্য

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
এপ্রিল ৩, ২০২২ ২:৪৭ অপরাহ্ণ
পাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সবাইকে ম্যানেজ করেই বাড়ানো হয় ওষুধের মূল্য


ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর দুর্নীতিবিষয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ফেলোশিপ-২০২১ এর আওতায় এবং ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক তৌহিদুর রহমানের নির্দেশনা ও সম্পাদনায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন।


শরীফুল রুকন : শুধু ডাক্তার নন, হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের একটি বড় অংশও ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে নগদ টাকাসহ নানা পদের উপহার নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ আছে। যার ফলস্রুতিতে কোন প্রকার বাধা ছাড়াই ইচ্ছে মত বাড়ে ওষুধের মূল্য।

একটি ওষুধ কোম্পানির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যেসব হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তাররা রোগী দেখেন, সেসব প্রতিষ্ঠানের মালিককেও নগদ টাকাসহ নানা উপহার দিয়ে ম্যানেজ রাখতে হয়। নয়তো ওনারা ডাক্তারদের বলে দেন যেন আমাদের ওষুধ লেখা না হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় ডায়গনস্টিক সেন্টার ‘শেভরণ’-এর আনোয়ারা শাখা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী করবে বলে, গত বছরের নভেম্বরেও আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। কিছু টাকা কম দিতে চেয়েছি, কিন্তু তাতে তারা নারাজ। পরে তাদের দাবি মতো পুরো টাকা দিয়েছি। কত টাকা দিয়েছি, সেটা বললে আমাদের প্রতিষ্ঠানকে তারা চিনে ফেলতে পারে। তখন আমাদের ওষুধ আর শেভরণে বসা ডাক্তাররা লিখবেন না, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। তবে ব্যাংকের মাধ্যমে আমরা এ টাকা দিয়েছি। তাদের ব্যাংক হিসাব ভালো করে যাচাই করলে সব প্রমাণ মিলবে। অন্য ওষুধ কোম্পানিগুলোকেও তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে টাকা দিতে হয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শেভরণের আনোয়ারা শাখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রোগ্রামে তারা (ওষুধ কোম্পানি) কন্ট্রিবিউট করে, সেটা অন্য ব্যাপার। অন্য ব্যাপার বলতে তারা বছরে লক্ষ লক্ষ টাকার ওষুধ আমার দোকানে বিক্রি করে। আমি অন্য কারও কথা বলবো না। আমার ওষুধের দোকানটি (শেভরণের ফার্মেসি) এতিমখানার দোকান। এটা আমি মাদ্রাসার জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছি। আমার মাদ্রাসা হচ্ছে। পারলে আপনিও সহযোগিতা করবেন, আমি ভাই হিসেবে বলছি।’

এভাবে প্রসঙ্গ পাল্টাতে চাইলে ‘আপনার প্রোগ্রামে ওষুধ কোম্পানিগুলো কী কন্ট্রিবিউট করেছে’ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘না, এগুলো ভুল কথা। ওরা একটা সময় যেটা করতো, মানুষের ভিড় বেশি হতো। আমরা সেটি পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছি। তাদের ভিজিট পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছি। আমার এখানে ৬৪ জন ডাক্তার বসেন শুধুমাত্র আনোয়ারাবাসীকে সেবা দেওয়ার জন্য। এমআরদের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই। আমার নিজেরও একটা ওষুধ কোম্পানি আছে, অরবিট। বাজারে আসতে আমাদের আরও বছরখানেক লাগবে।’

‘কী কন্ট্রিবিউট করে’ আবার জানতে চাইলে মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘কন্ট্রিবিউট বলতে এখানে কেউ যদি মনে করে যে আমাকে দশটি ডায়েরি দেবে, এটাও এক ধরনের কন্ট্রিবিউশন। কেউ যদি মনে চায় যে ১০টি প্যাড দেবে, ৫০টি কলম দেবে, এটাও এক ধরনের কন্ট্রিবিউট করা। কন্ট্রিবিউট বলতে অনেক ধরনের বুঝায়। ওরা এসে ৫০ জন ডাক্তারকে ৫০টা কলম দিল, ৫০টি প্যাড দিল, ৫০টি ডায়েরি দিল। এটাই কন্ট্রিবিউট।’

ওষুধ কোম্পানিগুলো নগদ টাকা দিচ্ছে আপনার প্রতিষ্ঠানকে- এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মীর মোশাররফ হোসেন হেসে বলেন, ‘আমি জানবো না, ভাই। আমি জানবো না।’ আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দিয়েছে, গত নভেম্বরে- জানালে তিনি বলেন, ‘আমি জানবো না।’ আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে টাকাগুলো দেয়া হয়েছে বলার পর মীর মোশাররফ কিছুক্ষণ চুপ থাকেন, তারপর বলেন, ‘আমি জানবো না, ভাইয়া।’ পরক্ষণে তিনি বলেন, ‘আপনাকে কোন কোম্পানি বলেছে এ কথা?’

‘নাম প্রকাশ করলে তাদের ওষুধের নাম নাকি আপনার ডাক্তাররা আর লিখবেন না- এ কারণে প্রকাশ করা যাচ্ছে না’ জানালে মোশাররফ বলেন, ‘তারা যেহেতু বলেছে, আপনার জানাতে সমস্যা নেই। এত কষ্ট করে বড় বড় ডাক্তারদের আমি নিয়ে এসেছি, শুধু সেবা দেয়ার জন্য, অন্য কিছুর জন্য নয়। ঠিক আছে, ধন্যবাদ।’ এ কথা বলে ফোন কেটে দেন মোশাররফ।

সূত্র. একুশে পত্রিকা/ শেখ মেহেদী হাসান

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ