বুধবার , ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

ঈশ্বরদী-সস্তার হাড়ভাঙা পরিশ্রমের আয়ে চলে তাদের সংসার

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২ ৪:৪১ অপরাহ্ণ
ঈশ্বরদী-সস্তার হাড়ভাঙা পরিশ্রমের আয়ে চলে তাদের সংসার

তাদের অভাব অনটনের সংসার, কেউ স্বামী পরিত্যক্তা, কেউ আবার বিধবা, কেউ আবার সংসারের হাল ধরেছেন। কারো ছেলে-মেয়েরা খোঁজ রাখে না।

অনেকের পরিবারে উপার্জন করার মতো একজন মানুষ! গৃহস্থালী কামলা দিয়ে যা আয় হয়, ঠিকমতো সংসার সংসার চালানো কঠিন।
অথচ পায়নি সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা! তাই সস্তা পরিশ্রমে রোজগারে নেমেছেন নারীরা। আর তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শিশুরাও কাজ করছে।


১ কেজি মটরশুঁটি তুললে মেলে ১২ টাকা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাজ করলে মেলে ২০০ টাকা।


ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নে ক্ষেতে বসে মটরশুঁটি তুলছেন নারী শ্রমিকেরা। ষখুব সস্তা শ্রমে তারা শ্রম বিক্রি করছেন। ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নে এরকম অর্ধশত নারী শ্রমিক রয়েছেন।

বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। এভাবেই ক্ষেত মালিকেরা শ্রম আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সস্তায় অভাবী নারী-শিশুদের শ্রম কিনছেন!

সংসারে যোগান দিতে কোমলমতি শিশু ছেলে ও মেয়েরাও এই পেশায় নেমেছে। শিখা, দীপ্তি, আজমেরী, রাখী, হাসান, সকলেই উপজেলার মুলাডুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্কুল বন্ধ তাই জীবন-জীবিকার তাগিদে কর্মব্যস্ততা তাদেরও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নে মাঠের পর মাঠ জুড়ে এ বছর আবাদ হয়েছে শীতকালীন ফসল মটরশুঁটি। উপজেলার মুলাডুলিতে বেশিরভাগ মানুষ ক্ষেতে দৈনিক হাজিরাতে কামলার কাজ করেন। বয়সের কারণে স্বামী অসুস্থ, রোজগার করতে পারেন না। কেউবা স্বামী পরিত্যক্তা বলে সন্তানের পড়ালেখার খরচ জোগাড় করছেন। কেউ বিধবা! কারো সংসারে ছেলে-মেয়েরা কোনো খোঁজই রাখে না। অনেকের পরিবারে তাদের সদস্য বেশি হওয়াতে একজনের আয়ে সংসার চলে না। শীত মৌসুমে শীতের সবজি বা ফসল তোলাতে নারী শ্রমিকরা মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। সুবিধাভোগী ক্ষেত মালিকরা সামান্য মজুরিতে নারী-শিশু শ্রমিকের কাছ থেকে তাদের শ্রম কিনছেন। পরিবারে বেশ অভাব অভাব থাকার কারণে নারী, ছোট ছোট মেয়ে শিশু শ্রমিককে কাজে লাগিয়ে। অথচ একজন নারী শ্রমিক অন্যকাজ করলে মেলে গড়ে ৪-৫শ’ টাকা। নানা বয়সী নারীরা সারিবদ্ধ হয়ে ক্ষেতের মাঝে বসে মটরশুঁটি বাছাইয়ের কাজ করছেন।

সত্তর বছর বয়সী মুলাডুলি ইউনিয়নে রহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা তরিফুন্নেছা। বয়সের ভারে তিনি নিজে ন্যুয়ে পড়লেও দেখে বোঝা যায় না। স্বামী অসুস্থ, তিন ছেলে-মেয়ে। এক মেয়ে বিয়ে হয়ে গেছে। দুই ছেলে আলাদা থাকলেও মা-বাবার কোনো খোঁজ রাখে না। অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসা, সংসার চলে তার শ্রম বিক্রির আয়ে।

তিনি বলেন, কেজিতে ১২ টাকা, সারাদিনে ২০ কেজি মটরশুঁটি তুলতে পারি। আবার সেই মটরশুঁটি বেছে পরিস্কার করে ওজন করে গৃহস্থ। তারপর মেলে পারিশ্রমিক। সারাদিনে ২৪০ টাকা থাকে। তবে গৃহস্থরা যদি কেজি প্রতি ১-২ টাকা বাড়িয়ে দিতো, ভালো হতো।

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার মেয়ে, এক সন্তানের জননী স্বপ্না বেগম (৩০)। বিয়ের কিছুদিন পরে স্বামী আরেকটি বিয়ে করে সংসার করছে। স্বপ্না এখনও শ্বশুরবাড়ি মাটি আকঁড়ে পড়ে আছেন সন্তান। একমাত্র ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছেন। সন্তানকে মানুষ করার আশায় শ্রম বিক্রি করছেন।

ষাটোর্ধ্বো বয়সী মাহেলা বেগম। মুলাডুলি ইউনিয়নের গোয়ালবাথান গ্রামের শ্রমজীবী এক নারী। আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাপরে আমি একা মানুষ!’ সন্তানরা কোনো খোঁজ রাখে কি-না? জানতে চাইলে বলেন, ‘দ্যাখলে কী এই কাজ করা লাগে!’ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে মাহেলা বেগম বলেন, ‘আমি মা তো! ভাত না দিলেও তো সন্তান। তাদের সংসার আছে। থাকুক তারা ভাল।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি সারাদিনে যা আয় করি, তা দিয়ে চলে যায় দিন। বয়স্ক ভাতা মেলে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার কতোকিছুই দেয়, কিন্তু কিছু মেলে না।

ঈশ্বরদীর মুলাডুলি মধ্যপাড়া গ্রামের বিধবা নারী ছকিনা বেগম (৬২), মর্জিনা বেগম (৬৫) আমেনা বেগমের (৬০) মতো অনেক নারীদের আয়ে হাঁড়িতে ভাত চড়ে।

মুলাডুলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আজমেরী খাতুন জানান, আমার বাবা কৃষকের কাজ করেন। যা আয় হয়, এতে সংসার চলে না। আমি সবকিছু বাবার কাছে চায় না। পড়াশুনা করি পাশাপাশি একটু কাজ করি, এই টাকা জমিয়ে কখনো স্কুলের খাতা, নতুন জামা কাপড় কেনা হয়। করোনার জন্য স্কুল ছুটি। তাই একটু কাজে এসেছি।

ঈশ্বরদীর মুলাডুলি মধ্যপাড়া গ্রামের সুবিধাভোগী মহাজন গৃহস্থ সিরাজুল ইসলাম শিরু খোন্দকার বলেন, যারা কাজ করেন, আশপাশের গ্রামের মানুষ। সে কারণে পারিশ্রমিক বাড়ানো সম্ভব হয় না। পরিবারের অভাব পূরণ করতে ৫-৬ ঘণ্টা কাজ করে ২০০-২৫০ টাকা মেলে। এতে তাদের উপকার হয় বলে বাইরে থেকে কাউকে নেওয়া হয় না।

ঈশ্বরদী মুলাডুলি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আ. খালেক মালিথা বলেন, মুলাডুলি ইউনিয়নে হতদরিদ্র নারীদের সস্তা শ্রমে ব্যবহার করে গৃহস্থরা। তাদের মজুরি যেটা দেওয়া হয়, তা পরিশ্রমের তুলনায় অনেক কম। গৃহস্থদের একটু বিবেচনা করা দরকার। যেন শ্রমিকের শ্রম অনুযায়ী পারিশ্রমিক কম না হয়। আর আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। আগে যে চেয়ারম্যান ছিল, তিনি ইচ্ছেমত বিভিন্ন ভাতা ও সরকারি সহযোগিতা মুখ চিনে মানুষকে দিয়েছে। আমি তাদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে সহযোগিতা করবো।

( প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন সাংবাদিক টিপু সুলতান) ।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

আপনার জন্য নির্বাচিত
ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় রিক্সা চালকের মৃত্যু

ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় রিক্সা চালকের মৃত্যু

পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিলেন মমতা

পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিলেন মমতা

ঈশ্বরদীবাসী প্রধানমন্ত্রীর শপথবাক্য পাঠ করলেন

ঈশ্বরদীবাসী প্রধানমন্ত্রীর শপথবাক্য পাঠ করলেন

ঈশ্বরদী-বিফ খিচুড়ি, এক প্লেট ৮০ টাকা

ঈশ্বরদী-বিফ খিচুড়ি, এক প্লেট ৮০ টাকা

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দেশ

ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দেশ

ছাত্রলীগ-বিএনপি ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া
ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কার্যালয় লক্ষ্য করে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ

ইয়াসমিন আক্তার নিপা রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোন নন

ইয়াসমিন আক্তার নিপা রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোন নন

ঈশ্বরদীর সেই ৩৭ কৃষককে ব্যাংক ঋণ থেকে দায়মুক্ত করল বসুন্ধরা গ্রুপ

ঈশ্বরদীর সেই ৩৭ কৃষককে ব্যাংক ঋণ থেকে দায়মুক্ত করল বসুন্ধরা গ্রুপ

উপকূল পেরিয়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কেন্দ্র, ৯ ফুটের জলোচ্ছ্বাস

উপকূল পেরিয়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কেন্দ্র, ৯ ফুটের জলোচ্ছ্বাস

আজ থেকে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা
ঈশ্বরদীর নবাগত ইউএনও’র সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

error: Content is protected !!