সোমবার , ৪ এপ্রিল ২০২২ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

ঈশ্বরদীতে এক ছাদেই ৩০০ জাতের গোলাপ

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
এপ্রিল ৪, ২০২২ ৬:৫২ অপরাহ্ণ
ঈশ্বরদীতে এক ছাদেই ৩০০ জাতের গোলাপ

ছোট্ট একটি ছাদ। তাতে থরে থরে বসানো হয়েছে কয়েকশ টব। সারিবদ্ধ করে রাখা এসব টবে জায়গা করে নিয়েছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জাতের ৩০০ গোলাপ গাছ।

ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের পাটশালা গ্রামের বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা দানিয়াসুল আলম শামিমের এমন উদ্যোগ সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তিনি জনতা ব্যাংকের রূপপুর শাখার সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

দানিয়াসুল আলম শামিম বলেন, ‘স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ফুল বাগানের প্রতি আগ্রহ ছিল। রাজশাহীর একটি পুষ্পমেলায় প্রায় ১০০ জাতের গোলাপ দেখে মুগ্ধ হই। তারপর ২০১৫ সালে বিয়ের পর স্ত্রীর অনুপ্রেরণায় গোলাপের প্রতি বিশেষ আকর্ষণের কারণে বিভিন্ন জাতের গোলাপ সংগ্রহ শুরু করি। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে আজকের এই অবস্থায় পৌঁছেছে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ছাদে প্রায় ৩০০ জাতের গোলাপ আছে। কোথাও ভালো জাতের গোলাপের সন্ধান পেলে ছুটে চলে যাই। ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে ভারতের খড়গপুরে ‘পুষ্পাঞ্জলি’ নার্সারির সন্ধান পাই। এটি এশিয়ার মধ্যে গোলাপ ফুলের সবচেয়ে বড় নার্সারি। এখান থেকেই সবচেয়ে বেশি গোলাপ ফুলের জাত সংগ্রহ করেছি। প্রতি বছরই নতুন নতুন জাত সংগ্রহের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে। জাত সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়।’

শামিমের ছাদে নানা জাতের গোলাপের মধ্যে রয়েছে- ডাবল ডিলাইট, জুলিও ইগলিসিস, কুইন মেরি, সোলারি, জর্জ বার্নস, সেন্টিমেন্টাল, পিংক প্রমিজ, বোটরো, মিডনাইট ব্লু, মুনস্টোন, লর্ড লুইস, সোফিয়া লরেন, প্যারাডাইস, রিমেম্বার, ক্যালিফোর্নিয়া ড্রিমিন, ব্লু ফর ইউ, ডায়ানা প্রিন্সেস ও মারভেলি, ফেন্সি টক, ফায়ার ফল, গোল্ড মেডেল, হট পয়েন্ট, লাভ এন্ড পিচ, অরেঞ্জ ফায়ার, সোলারিয়া, তাজমহল, টেডিবিয়ার, এলিনকা, এম্বার কুইন, বহুরূপী, কলকাতা-৩০০, বেলেরিনা, ক্যাসানোভা ও চিপার।

বঙ্গবন্ধুর নামে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামে গোলাপের জাত রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে সেভাবে উল্লেখযোগ্য জাত নেই। গবেষণার মাধ্যমে আমি চেষ্টা করছি গোলাপের একটা নতুন জাত উদ্ভাবনের। সফল হলে সেটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করব।’


শামিমের কাজের অন্যতম সহযোগী তার বাবা আব্দুস সাত্তার। পিজিসিবির অবসরপ্রাপ্ত এই প্রকৌশলী অবসর সময়ে বাগান পরিচর্যা করে সময় কাটান। তিনি বলেন, ‘ছেলে যখন থাকে না, তখন বাগানের বিভিন্ন ধরনের পরিচর্যার কাজগুলো আমাকে করতে হয়। এতে বেশ ভালোই লাগে, সময়টাও কেটে যায়। এর মধ্যেই আমার মৃত স্ত্রীকেও আমি খুঁজে পাই।’

শামীমের স্ত্রী জিয়াসমিন আরা বলেন, ‘আমাদের বিয়ের আগেও ও বাগান করত। মাঝে বন্ধ ছিল। ২০১৫ সালে আমাদের বিয়ের পর একদিন তাকে একটা গোলাপ গাছ অনেকটা জোর করেই কিনেয়েছিলাম। এরপর থেকেই একটা একটা করে গোলাপ কিনতে কিনতে আজ ৩০০তে দাঁড়িয়েছে। প্রথমে পাগলামি মনে হলেও এখন ওকে উৎসাহ দেই। খুবই ভালো লাগার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এ বাগান।’

মেডিকেল শিক্ষার্থী খাদিজাতুল মনিরা বলেন, ‘আমার যখন ভালো লাগে তখনই বাগানে চলে আসি। এ রকম অনেক রকমের গোলাম আগে কখনই দেখিনি। আমার মতো এলাকার অনেকেই এখানে আসেন।’


দানিয়াসুল আলম শামিমের সহকর্মী জনতা ব্যাংক রূপপুর শাখার ব্যবস্থাপক তাহমিনা হক বলেন, ‘আমাদের এই সহকর্মীর বাগান নিয়ে আমরাও গর্বিত। আমরা অফিসের সবাই যখনই সময় পাই তার বাগানে যাই, সময় কাটাই। সারাদিন অফিসের ক্লান্ত ব্যস্ততা শেষে উনার বাগানে গিয়ে মুগ্ধ হই, এতে আমাদের কর্মস্পৃহা বাড়ে।’

তিনি বলেন, ‘এটা নিংসন্দেহে একটা ভালো উদ্যোগ। আমরা এ রকম একটা গোলাপপ্রেমী সহকর্মী পেয়ে গর্বিত। আমরাও তার থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে অফিসের ছাদে বাগান করেছি। এছাড়া উনাকে দেখে অনেকেই উদ্ধুদ্ধ হয়ে বাগান করেছেন।’

পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, শামীমকে ধন্যবাদ জানাই তিনি একজন ব্যাংকার হয়েও অবসর সময়ে নিজের ছাদে ৩০০ জাতের গোলাপ ফুল সরবরাহ করেছেন। প্রয়োজনে আমরা শামীমকে উপযুক্ত প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সহযোগিতা করব। জাত উদ্ভাবনে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের ফ্লোরি কালচার ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা করব।’

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

error: Content is protected !!