সোমবার , ১৫ নভেম্বর ২০২১ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

আমাদের ঈশ্বরদী’র নওশের আলী : মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
নভেম্বর ১৫, ২০২১ ৫:৫৯ অপরাহ্ণ
আমাদের ঈশ্বরদী’র নওশের আলী : মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক

সরোয়ার মোর্শেদ : ঈশ্বরদীর নওশের আলী পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ৯ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। সেখানে তিনি আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দিতেন। এ কারণে রাজাকাররা তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত ছিল।

পাকিস্তানি হানাদার সেনারা তখন পাবনায় গ্রামে গ্রামে হানা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষদের ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। প্রাণ বাঁচাতে নওশের আলী রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলায় তাঁর বোনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সেখান থেকে রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি বাহিনী তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর আর ফিরে আসেননি তিনি। তাঁর লাশও পায়নি পরিবার।

নওশের আলীর বাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার আড়মবাড়িয়া গ্রামে। বাবা বাহাউদ্দিন শেখ ও মা নূরজাহান শেখের সংসারে ১৯৩০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাঁর জন্ম। ছয় ভাই, এক বোনের মধ্যে নওশের আলী ছিলেন তৃতীয়। স্কুলজীবন কাটিয়েছেন রাজশাহীতে। ১৯৫৬ সালে তিনি রাজশাহী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। সেখান থেকে ১৯৪৮ সালে আইএসসি পাস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে এমবিবিএস পাস করে ফিরে আসেন ঈশ্বরদীতে।


আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে সরকারি তালিকায় বাবার নাম অন্তর্ভুক্ত করতে এবং বাবার নামে একটি সড়ক, স্কুল, হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি জানাই।
                                                                                                     -মেয়ে সাবিনা ইকবাল


শহীদ নওশের আলী ঈশ্বরদীর আলহাজ টেক্সটাইল মিল, নর্থ বেঙ্গল পেপার মিল, ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মেডিকেল অফিসার হিসেবে কাজ করেন। সর্বশেষ তিনি পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসে (পিআইএ) মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগ দেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি চাকরি ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন ৯ নম্বর সেক্টরে। সেখানে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা দিতেন। মাঝে কিছুদিনের জন্য গ্রামের বাড়ি ঈশ্বরদীতে ফেরেন। এ সময়ই পাকিস্তানি হানাদাররা গ্রামে গ্রামে হামলা করতে থাকে।

১৫ এপ্রিল স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় বোনের বাড়ি থেকে নওশের আলীকে তুলে নিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদার সেনারা। তাঁকে ছাড়া আরও তিনজনকে তারা নিয়ে যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ক্যাম্পে। এর পর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি নওশের আলীর। আগামী প্রকাশনীর শহীদ বুদ্ধিজীবী কোষ গ্রন্থে এবং সাহিত্য প্রকাশ থেকে প্রকাশিত বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক জীবনকোষ গ্রন্থে শহীদ নওশের আলীর সচিত্র জীবনী রয়েছে।

নওশের আলীর তিন ছেলে ও তিন মেয়ে, সবাই যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী। তাঁর স্ত্রী শামসুন্নাহার সন্তানদের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। সম্প্রতি নওশের আলীর তৃতীয় মেয়ে সাবিনা ইকবাল দেশে এসেছেন। তিনি বলেন, তাঁর বাবাকে যখন ফুফুর বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র চার বছর। তাঁর সামনেই বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়। কিন্তু দেশে আমার বাবার কোনো স্মৃতিচিহ্ন নেই। কোনো সরকারি স্বীকৃতি নেই। আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে সরকারি তালিকায় বাবার নাম অন্তর্ভুক্ত করতে এবং বাবার নামে একটি সড়ক, স্কুল, হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি জানাই।’

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

আপনার জন্য নির্বাচিত
error: Content is protected !!